রাজনৈতিক টানাপড়েনের জেরে টানা ১০৪ দিন অচল হয়ে রইল দার্জিলিং। মাসখানেক আগে সেই বন্ধ উঠলেও সরকারি কলেজের শিক্ষকেরা তার মাসুল গুনে চলেছেন এখনও। অগস্ট থেকে বেতন পাচ্ছেন না তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধায়ের দ্বারস্থ ওই শিক্ষকেরা।
‘‘বন্ধের ১০৪ দিন ওই শিক্ষকেরা কাজ করেছেন কি? ডিপিআই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দার্জিলিং যাবেন,’’ শুক্রবার বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
ক্ষমতায় এসেই তৃণমূল সরকার ফরমান জারি করেছিল, বন্ধ-ধর্মঘটে কর্মস্থলে গরহাজির থাকলে বেতন কাটা হবে। দু’-এক দিনের বন্ধে কিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ দেখাও গিয়েছিল। পাহাড়েও সাম্প্রতিক অচলাবস্থার সময়ে সরকারি দফতরে অনুপস্থিতির জন্য বেতনে ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তা কার্যকরও হয়েছিল। পরে সেই সব ক্ষেত্রে বেতন ফের চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দার্জিলিঙের সরকারি কলেজে এখনও বেতন বন্ধ থাকায় শিক্ষাজগতে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, নিছক জেলাশাসকের সন্দেহের বশেই ওই কলেজের শিক্ষকদের বেতন আটকে গিয়েছে। কী রকম সন্দেহ? বিকাশ ভবন জানাচ্ছে, পাহাড়ে লাগাতার বন্ধের সময়ে ওই কলেজের শিক্ষকেরা কর্মস্থলে যাননি বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে জেলাশাসকের দফতর। তারই জেরে ওই শিক্ষকদের বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মহলের মতে, বন্ধ চলাকালীন পাহাড়ে যে-অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে তখন কলেজে প্রতিদিন ক্লাস করানো যে সম্ভব ছিল না— এটা বোঝা খুব কঠিন নয়। সেই বন্ধও উঠে গিয়েছে মাসখানেক আগে। তা সত্ত্বেও ওই কলেজের শিক্ষকদের বেতনের সুরাহা হয়নি।
এই ভাবে শিক্ষকদের বেতন বন্ধের ঘটনা অভূতপূর্ব বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার। তিনি বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন শিক্ষকের মাইনে দেওয়ার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে পড়ে না। গোটা বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।’’
দেবাশিসবাবু জানান, দার্জিলিং সরকারি কলেজের পূর্ণ সময়ের ৭১ জন এবং আংশিক সময়ের ৪১ জন শিক্ষকের বেতন অগস্ট থেকে বন্ধ। পূর্ণ সময়ের ৭১ জন শিক্ষকের মধ্যে ইতিমধ্যে চার জন অন্যত্র বদলি হয়েছেন। এবং সেখানে গিয়েও তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে দেবাশিসবাবুরা শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিপিআই জয়শ্রী রায়চৌধুরীকে পুরো বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নভেম্বরের গোড়ায় তাঁর দার্জিলিঙের সরকারি কলেজে যাওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy