Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ধারাবর্ষণে খুশি চাষিরা, চিন্তা সেচ দফতরের

উত্তরে ঘূর্ণাবর্ত। দক্ষিণে মৌসুমি অক্ষরেখা! এই জোড়া ফলার দাপটে সারা রাজ্যেই জোরালো হয়েছে বর্ষা। মরসুমের শুরুতে বৃষ্টির কৃপণতায় চাষের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো প্রমাদ গুনছিলেন চাষিরা। তবে অগস্টের মাঝামাঝি বর্ষার এমন ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের মেজাজ তাঁদের আশঙ্কা অনেকটাই কাটিয়ে দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৫
Share: Save:

উত্তরে ঘূর্ণাবর্ত। দক্ষিণে মৌসুমি অক্ষরেখা!

এই জোড়া ফলার দাপটে সারা রাজ্যেই জোরালো হয়েছে বর্ষা। মরসুমের শুরুতে বৃষ্টির কৃপণতায় চাষের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো প্রমাদ গুনছিলেন চাষিরা। তবে অগস্টের মাঝামাঝি বর্ষার এমন ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের মেজাজ তাঁদের আশঙ্কা অনেকটাই কাটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রাজ্যের সেচ দফতর। যদিও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির কোনও খবর মেলেনি। তবে সেচকর্তারা জানান, বন্যার আশঙ্কার কথা মাথার রেখে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিভিসি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে জলাধারগুলির উপরেও নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে।

আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বুধবার উত্তরবঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত ছিল। তার সঙ্গে ছিল মৌসুমি অক্ষরেখাও। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৌসুমি অক্ষরেখাটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে সরে এসেছে। ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন জানান, ঘূর্ণাবর্ত ও মৌসুমি অক্ষরেখার যুগলবন্দিতেই এই বর্ষণ। শুক্রবারের পরে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি কমবে। তবে মৌসুমি অক্ষরেখার জন্য দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে আরও কয়েক দিন। কারণ, আপাতত দক্ষিণবঙ্গেই ওই অক্ষরেখার থিতু হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির জেরে বুধবার থেকেই বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রের খবর। ওই দফতরের বক্তব্য, এ দিন ভরা কোটালের ফলে নদীতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছিল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। দফতরের কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছে।

সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বৃহস্পতিবার ভরা কোটালের পরে নদীতে জলের পরিমাণ কিছুটা কমে যাবে।”

তবে শুধু এ রাজ্যে নয়। গোটা দেশেই বর্ষা জোরালো হচ্ছে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। এর ফলে বৃষ্টি-ঘাটতিও মিটছে। মরসুমের গোড়ায় আশঙ্কা করা হয়েছিল, এ বছর বৃষ্টির ঘাটতি তো থেকে যাবেই। এমনকী কোনও কোনও রাজ্যে খরা পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে। তবে গত মঙ্গলবার বর্ষার সর্বশেষ পূর্বাভাসে কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান দফতরের বিজ্ঞানীরা জানান, চলতি মরসুমে বৃষ্টির ঘাটতি না-মিটলেও দেশে খরার আশঙ্কা আর নেই। তাঁরা বলছেন, জুলাইয়ের শেষ লগ্ন থেকে গোটা দেশেই বর্ষা ছড়িয়ে পড়েছে। মধ্য ও পশ্চিম ভারতের কয়েকটি রাজ্যে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক হয়েছে। অগস্টেও ভাল পরিমাণে বৃষ্টির আশা করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।

দেশ জুড়ে বৃষ্টির দাপট ছড়িয়ে পড়ায় প্রায় সর্বত্রই খরিফ চাষে উন্নতির লক্ষণ দেখছেন কৃষি-আবহবিদেরা। এ রাজ্যে অবশ্য কখনওই সে-ভাবে বৃষ্টির আকাল দেখা যায়নি। তবে কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ধানচারা রোয়ার ক্ষেত্রে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE