নিজস্ব চিত্র
কলকাতার রবিনসন কাণ্ডের ছায়া হাওড়ার ওলাবিবিতলায়। স্বামী এবং বোনের মৃত্যুর ৩-৪ দিন পরেও তাঁদের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন মহিলা। ২টি মৃতদেহ পচে গলে দুর্গন্ধ বেরচ্ছে কিন্তু তাতেও হেলদোল নেই তাঁর। ঘটনাটি ঘটেছে চ্যাটার্জিহাট থানার অন্তর্গত ওলাবিবিতলা এলাকায়। এই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে সপরিবারে থাকতেন নিশীথরঞ্জন মণ্ডল। তিনি হাওড়া পুর নিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। শুক্রবার তাঁদের ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরতে দেখে চ্যাটার্জিহাট থানায় খবর দেন এলাকার মানুষ। পুলিশ এসে দেখতে পায়, স্বামী ও বোনের মৃতদেহ আগলে ঘরের মধ্যেই বসে রয়েছেন নিশীথের স্ত্রী। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই পরিবারের কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার তাঁদের খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন প্রতিবেশিরা। স্থানীয় বাসিন্দা অসীম মাঝি বলেন, ‘‘বাড়ির ভেতর থেকে শুক্রবার সকালে দুর্গন্ধ বেরতে থাকে। কৌতূহলের বশে সকলে বাড়িতে যান। তার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশে খবর দেন।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১/৩ ওলাবিবিতলা লেনের তিনতলার একটি ঘরে দু’টি মৃতদেহ পড়ে ছিল। মৃতদের মধ্যে এক জন পুরুষ, যাঁর নাম নিশীথরঞ্জন মণ্ডল (৭৫) ও একজন মহিলা, অনিতা ঘোষ (৬০)। অনিতা নিশীথের শ্যালিকা। এঁদের ২ জনের দেহ আগলে বসে ছিলেন নিশীথের স্ত্রী পাপড়ি মণ্ডল। স্থানীয়দের বক্তব্য, হাওড়ার বুকে এই ঘটনা ২০১৫ সালের কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেখানে পার্থ দে নামে জনৈক ব্যক্তি তাঁর বোনের মৃতদেহ আগলে রেখেছিলেন।
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রাজা দাস জানান, ‘‘এই পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। এঁদের একমাত্র সন্তান দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুখে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে চিকিৎসার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওই পরিবারের কাউকেই ইদানিং বাইরে দেখতে পাননি কেউ।’’ পুলিশ দেহ ২টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy