ভাঙড়ে বিমানবন্দর তৈরি নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী। ফাইল চিত্র
কলকাতার কাছেই হতে চলেছে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর। এর জন্য জমি দেখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে একসঙ্গে অনেকটা জমি পাওয়া যেতে পারে। যে কারণে ওই অঞ্চলে জমি দেখা হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্র উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছিল তৃণমূলের মুখপত্রে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ভাঙড়ে বিমানবন্দর নির্মাণের সরাসরি বিরোধিতায় নামলেন আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিবৃতি প্রকাশ করে নওশাদ তাঁর বিরোধিতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি বলতে চাই, সিঙ্গুরে বিমানবন্দর তৈরিতে উদ্যোগী হোন। অন্ডালের বিমানবন্দরকে সঠিকভাবে ব্যবহারের উপযুক্ত করুন। উত্তরবঙ্গে কোচবিহার বিমানবন্দর চালু করুন। আগে ভাঙড়বাসীর মৌলিক চাহিদা পূরণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হোন। রেলের মানচিত্রে ভাঙড়ে সংযুক্তিকরণে উদ্যোগী হোন, হাসপাতাল পরিকাঠামো উন্নত করুন, চাষিদের জন্য উন্নতমানের হিমঘর তৈরির ব্যবস্থা করুন। এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আপনাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব।’’ নওশাদ আরও বলেন, ‘‘জোর করে জমি নিয়ে বিমানবন্দর বানানোর নামে সংখ্যালঘু অনগ্রসর মানুষদের ভিটেমাটি ছাড়া করে উচ্চবর্গীয় নগরায়ন আমরা কোনও অবস্থাতেই মানব না।’’
সম্প্রতি দমদমে নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উপর অত্যাধিক চাপ বেড়েছে। যে কারণে কাছাকাছি আরেকটি বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বোয়িং ৭৭৭-এর মতো বড় বিমান যাতে নামতে পারে, তেমন প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রানওয়ে বিশিষ্ট বিমানবন্দর তৈরির জন্য জমি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের মাথায় রয়েছে, বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে এক সঙ্গে অনেক বিমান রাখার বিষয়টিও।
তৃণমূলের মুখপত্র জানানো হয়েছিল, সেই মতো জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বিষয়েই ভাঙড়ে জমি নেওয়ার কথা। তবে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভাঙড়ের বিধায়ক বলেন, ‘‘বিমানবন্দর হলে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের অস্তিত্ব লোপ পাবে। এইসব গ্রামের হাজার, হাজার মানুষ, যাদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু অনগ্রসর মানুষ, তাঁরা যাবেন কোথায়? বোঝা যাচ্ছে যে বিমানবন্দরতৈরির নামে তিন-চার অতি উর্বর ফসলি জমি অধিগ্রহণ হবে, মানুষের কৃষি জমি চলে যাবে। এটা আবার সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘বর্তমান রাজ্য সরকার কি তার ঘোষিত জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নীতি থেকে সরে আসছে? এটা একটা খুব সঙ্গত প্রশ্ন। আমরা দেখেছি, পাশেই রাজারহাটে হাজার, হাজার বিঘে জমি অধিগ্রহণ করে ওখানকার গরিব সংখ্যালঘু-নিম্নবর্গের মানুষদের কী অবস্থা হয়েছে। সেই মানুষদের বড় অংশের কী অবস্থা, আমরা সকলেই জানি। বৃহত্তর চিত্র তো এটাই। কেউ অস্বীকার করতে পারবেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy