Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কাঁটাতার গলে ইলিশ আসছে বরফে মুড়ে

বরফ দেওয়া থার্মোকলের বাক্সের ভিতরে বোঝাই করে চলে আসছে ‘রুপোলি শস্য’। কোথাও নদীপথ, কোথাও কাঁটাতারের ফাঁক গলে এপারে তারা। চকচক করতে থাকা আটশো থেকে এক কেজি ওজনের সেই ইলিশ দেখলেই যেন মনে ভরে যায়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩০
Share: Save:

বরফ দেওয়া থার্মোকলের বাক্সের ভিতরে বোঝাই করে চলে আসছে ‘রুপোলি শস্য’। কোথাও নদীপথ, কোথাও কাঁটাতারের ফাঁক গলে এপারে তারা। চকচক করতে থাকা আটশো থেকে এক কেজি ওজনের সেই ইলিশ দেখলেই যেন মনে ভরে যায়। দামে একটু বেশি হলেও বাক্সের বাইরে বেরিয়ে আসতেই নিমেষেই হাওয়া যায়। বাংলার ওই ইলিশে মজেছে কোচবিহার। আশেপাশের জেলাতেও যে কিছু যাচ্ছে না তা নয়, আসলে ওই ইলিশের এমন চাহিদা যে আগাম বরাত দিয়েও রেখে দেন অনেকে।

এক মৎস্য বিক্রেতার কথায়, “১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় আটশো গ্রামের ওই ইলিশ বিক্রি হয়। এক থেকে সওয়া কেজির ইলিশ তো দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।” কিন্তু সেই ইলিশ যে বাংলাদেশের, তা বোঝার উপায় কী? ওই বিক্রেতা বলেন, “রুপোর মতো চকচক করবে। দেখলেই মনে হবে এ অন্য জিনিস। আর কড়াইয়ে পড়লে তো গন্ধে মন ভরে যাবে।” প্রশাসন-পুলিশ বা বিএসফের কেউই অবশ্য সরাসরি বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসার কথা স্বীকার করেন না। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “এমন খবর তো আমাদের কাছে নেই।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বিষয়টি দেখা হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএফের এক কর্তা অবশ্য জানান, বেশ কয়েক জায়গায় সীমান্তে কাঁটাতার নেই। সেই পথে চোরাকারবারীরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। তাঁর কথায়, “সেই পথে সামান্য কিছু আসতে পারে। তবে বড় ধরনের কারবার এখানে হয় না।” মৎস্য দফতরের কোচবিহারের জেলা আধিকারিক অলোক প্রহরাজ বলেন, “এই সময় কিছু ইলিশ বাজারে উঠেছে। তা দক্ষিণবঙ্গ থেকে এসেছে। বাংলাদেশের ইলিশ ঢোকার ব্যাপারে আমাদের নির্দিষ্ট কোনও খবর নেই।”

দক্ষিণবঙ্গের ইলিশ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। দিন দুয়েক হল তিনশো গ্রাম থেকে পাঁচশো গ্রামের কিছু ইলিশ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। সেই ইলিশের দামও অনেক কম। সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশো টাকা কেজি দরে ওই ইলিশ বিক্রি করছে। তবে তা তেমন সুস্বাদু নয়।

শহরের বাসিন্দা রাজা দত্ত বলেন, “এই ইলিশে মন ভরে না। গন্ধ নেই। স্বাদেও তৃপ্তি আসে না।” সবাই অপেক্ষা করে বাংলাদেশের ইলিশের। দিনহাটার গীতালদহ, নাজিরহাট থেকে শুরু করে তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙ্গা ও মেখলিগঞ্জেও কাঁটাতারবিহীন সীমান্ত রয়েছে। সেই পথেই চলে কারবার। চ্যাংরাবান্ধায় আবার কাঁটাতারের পথেই ইলিশের যাতায়াত রয়েছে বলে অভিযোগ। গীতালদহ, চ্যাংরাবান্ধা সহ একাধিক সীমান্ত দিয়ে গত চারদিনে অন্তত তিন কুইন্টাল ইলিশ এপাশে এসেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারাই জানিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Fishes Ice Packed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE