এ ভাবেই জবরদখল হয়ে যাচ্ছে নিকাশি খাল। ছবি: সুব্রত জানা।
জবরদখল হয়ে এলাকার বেশির ভাগ খাল বুজেছে আবর্জনায়। সংস্কার যথাযথ ভাবে হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে চাষিদের। খালের মধ্যেই স্তম্ভ বসিয়ে চলছে নির্মাণ। ফলে, গরমে চাষাবাদে সেচের কাজে এবং বর্ষায় জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে নিকাশির কাজে খালের সে ভাবে ব্যবহার না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন হাওড়ার শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লকের কয়েক হাজার চাষি।
দুই ব্লকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল শ্যামপুর খাল। দামোদরের এই খাল গিয়েছে শ্যামপুরের কোটরা পর্যন্ত। কিন্তু শ্যামপুর থানার কাছ থেকে নারকেলবাড় পর্যন্ত খালের দু’ধার ক্রমশ জবরদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। খালের উপরেই পিলার বানিয়ে অবাধে নির্মাণ হচ্ছে দোকান, ঘরবাড়ি। ফলে, খাল দিয়ে জল-নিকাশির জায়গা ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। দখলদারির পাশাপাশি দোকান-বাজার গড়ে ওঠায় নিকাশি খাল যেন জঞ্জাল ফেলার ভ্যাটে পরিণত হয়েছে। কেননা, দোকান, হাট-বাজারের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে খালেই। নিকাশি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাচ্ছে খেতে। বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব। জমিতে জল জমে যাওয়ায় শ্যামপুর ছাড়াও খাড়ুবেড়িয়া, কমলাপুর, শীতলপুর, কাঠিলাবাড়-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় পাঁচ-সাত হাজার চাষি সমস্যায় পড়ছেন। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের মদত থাকায় খালে দখলদারি বাড়ছে। প্রায় একই অবস্থা বেলপুকুর খাল, জাললাবাদ খাল-সহ দুই ব্লকের অন্তত ১০-১২টি খালের।
শ্যামপুরের বাসিন্দা উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, “এক সময়ে এই সব খাল ৩০-৪০ ফুট লম্বা ছিল। গভীরও ছিল বেশ। সারা বছর জল থাকত। নৌকা চলত। মাছ ধরে অনেকে জীবিকা নির্বাহও করতেন। এখন সবই অতীত। যথাযথ সংস্কারের অভাবে খালগুলি চর পড়ে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে।”
বেশির ভাগ খালই দেখভালের দায়িত্ব সেচ দফতরের। ওই দফতরের শ্যামপুর ডিভিশনের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন সময়ে খাল সংস্কারের কাজ চলে। পঞ্চায়েত সমিতিও সেই কাজ করে। শ্যামপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের রঞ্জিত বেরা বলেন, “কয়েক বছর আগেই আমরা নিকাশি খালগুলির সংস্কার করেছি। আবারও করব। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে টাকা আটকে যাওয়ায় ওই কাজে কিছুটা সমস্যা রয়েছে।” তবে, খাল দখল করে নির্মাণ নিয়ে তাঁর আশ্বাস, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy