পুরসভার গুদামঘর দখল করে রাখার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনের বিরুদ্ধে। চিত্রটি উলুবেড়িয়া পুরসভার। অভিযোগ, অন্তত ছয় মাস ধরে গুদামঘরটি দখল করে রেখে সংগঠনের কাজকর্ম চালাচ্ছেন নেতারা। পুরসভার বর্তমান প্রশাসনিক বোর্ডের তরফ থেকে একাধিকবার গুদামঘরটি ছেড়ে দিতে বলার জন্য এই সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হলেও তাতে কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে পুরসভার ভবনের সামনের মাঠে তিনটি ঘর তৈরি করা হয়। এই তিনটি ঘরের একটিতে রয়েছে জেনারেটর ও কিছু যন্ত্রপাতি। অন্য ঘরটিতে রয়েছে নলকূপের পাইপ-সহ কল তৈরির নানা সরঞ্জাম। তৃতীয় ঘরটি দখল করে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মচারি সংগঠন। এই ঘরটিই তৈরি করা হয়েছিল ত্রাণ সামগ্রী রাখার জন্য। ঘরটি এই ভাবে জবরদখল হয়ে যাওয়ায় ত্রিপল, শাড়ি, জামাকাপড়, কম্বল প্রভৃতি রাখার জায়গা পাচ্ছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। এক সময়ে ওইসব সামগ্রী রাখা হত পুরসভা ভবনের নীচের তলার কয়েকটি ঘরে। কিন্তু আয় বাড়ানোর জন্য এইসব ঘর কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে সেখান থেকে ত্রাণ সামগ্রী বের করে নেওয়া হয়েছে।
সেগুলি আপাতত রাখা হয়েছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একটি ঘরে। কিন্তু জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাকি ত্রাণসামগ্রী রাখা হয়েছে মহকুমাশাসকের দফতরের একটি ঘরে। জায়গার অভাবে যখন ত্রাণ সামগ্রী এইভাবে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে, তখন গুদামঘরটি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন এইভাবে জবরদখল করে রাখায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
উলুবেড়িয়া পুরসভা কর্মচারি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ঘর ছাড়া হবে না বলেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, পুরসভার বিগত তৃণমূল শাসিত বোর্ড তাদের ঘরটি পাকাপাকিভাবে ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দিয়ে গিয়েছে। ফলে ঘর ছাড়ার কোনও প্রশ্ন নেই।
সংগঠনের নেতাদের এই মনোভাবের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের নেতারা। এই পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কংগ্রেসের সাইদুর রহমান বলেন, “আমি যে অল্প কয়েকমাস পুরসভা চালিয়েছি তখন এইসব অনাচার ছিল না।”
অন্য দিকে পুরসভায় বিগত বোর্ডের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, “তৃণমূল শাসিত বোর্ড যদি নিজের দলের প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনকে ঘর দিয়ে থাকে তা ঠিক করেনি।”
সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিজেপি নেতা গৌতম রায়ও।” পুরসভার বর্তমান প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য তথা উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক নিখিল নির্মল বলেন, “ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য কর্মচারী সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন কী অবস্থা বলতে পারব না। আমি এখন ছুটিতে আছি।”
তবে সংগঠনের সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পুলক রায় বলেন রেজিষ্ট্রীকৃত যে কোনও শ্রমিক সংগঠনেরই কার্যালয় থাকতে পারে। তাতে বেআইনি কিছু হয়নি। ঘর ছাড়া হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy