দাবি মতো পুজোর চাঁদা না দেওয়ায় একদল যুবকের হাতে বেধড়ক মার খেলেন এক অসুস্থ টোটোচালক। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার রামরাজাতলা এলাকার পঞ্চাননতলায়। গুরুতর জখম অবস্থায় মন্টু সেনাপতি নামে ওই টোটোচালককে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এ দিন এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। টোটোচালকেরা দল বেঁধে এসে দফায় দফায় থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে এবং টোটোকে ঘিরে তোলাবাজি বন্ধ করতে হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই পুজোর নামে রামরাজাতলা এলাকার দোকান-বাজার, সব্জিবহনকারী ট্রলি ও টোটো থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করছিলেন এলাকার একটি ক্লাবের কয়েক জন সদস্য। এ দিন ভোরে যাত্রী নামিয়ে মন্টুবাবু যখন ফাঁকা টোটো নিয়ে ফিরছিলেন, তখন পঞ্চাননতলার কাছে ১০-১২ জন যুবক তাঁকে ঘিরে ধরেন। অভিযোগ, তাঁরা পুজোর জন্য ২০০ টাকা চাঁদা চান।
কিন্তু মন্টুবাবু জানান, তাঁর কাছে অত টাকা নেই। তা ছাড়া তিনি অত টাকা দিতেও পারবেন না।
অভিযোগ, এর পরেই ওই যুবকেরা মন্টুবাবুকে আক্রমণ করে রাস্তায় ফেলে পেটান। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে মারধর করার পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় ফেলেই পালিয়ে যান ওই যুবকেরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই মন্টুবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ দিকে, বেলার দিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কয়েকশো উত্তেজিত টোটোচালক চ্যাটার্জিহাট থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধও হয়। কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, মন্টুবাবু এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। সম্প্রতি ভিন্ রাজ্য থেকে অস্ত্রোপচার করে ফিরেছেন। তাঁর বন্ধুরাই তাঁকে আর্থিক সাহায্য করায় তিনি ওই টোটো কিনে চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁকেও এ ভাবে মারা হল।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামল রায় বলেন, “এলাকার যে যুবকেরা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হবে।” হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও তোলাবাজির অভিযোগ-সহ আরও বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy