সেই বাঁধ। —নিজস্ব চিত্র।
খাল সংস্কার এগোয়নি। এর মধ্যেই খালের দু’পাশে বাঁধের মাটি কেটে লরি করে পাচার করার অভিযোগ উঠছে। এমনকী ব্যক্তিগত চাষের জমিতে খালের জল দেওয়ার জন্য যে সব অস্থায়ী খাল কাটা হয়েছিল তার মাটি চুরির অভিযোগও উঠছে। স্থানীয়দের দাবি, সেই সব খাল বোজানোর জন্য চাষিদের থেকে মোটা টাকা দাবি করছে একটি চক্র। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
হাওড়া পুরসভার নস্করপাড়া-ভূতবাগান এলাকার ভিতর দিয়ে গিয়েছে সেচ দফতরের তিন নম্বর ব্রাঞ্চ ক্যানাল। এই খাল দিয়ে উত্তর-হাওড়া, বালি-সহ পুরসভার সংযুক্ত এলাকার নিকাশি জল হাসখালি ক্যানাল হয়ে গঙ্গায় যায়। অভিযোগ, বছরের পর বছর এই গুরুত্বপূর্ণ খালটির কোনও সংস্কার হয়নি। ফলে প্রতি বর্ষায় কোমরজল ভেঙে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয়দের। বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের ভূতবাগান এলাকার এই নিকাশির সংস্কার চাইছিলেন। অবশেষে ডোমজুড়ের বিধায়ক তথা সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে খাল সংস্কারে ৬ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পরই হাওড়া পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তি সেচ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে পরিচয় দিয়ে সংস্কারের কাজ তদারকি শুরু করেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানেই মাটি পাচার শুরু হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ জমছে বাসিন্দা থেকে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশের মধ্যেও। তাঁদের অভিযোগ, দলের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মী এই কাজে যুক্ত। এই বাঁধ প্রতি বর্ষায় নীচু এলাকার বাসিন্দাদের প্লাবন থেকে রক্ষা করত। ফলে এর মাটি চুরি হওয়ায় চরম সমস্যায় পড়বেন মানুষ। দলের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবু ‘মাটি চোরদের’ দমানো যায়নি। যেমন, গৃহবধূ স্বরূপা ছাউলে, লক্ষ্মী প্রামাণিকদের দাবি, প্রতি দিন মাটি কেটে লরি করে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বুলা পালের অভিযোগ, “আমার ও আশপাশের চাষিদের জমির মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এখন জমি বোজাতে মাটি চাইলে ৩০-৪০ হাজার টাকা দাবি করছে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।”
স্থানীয় তৃণমূলকর্মী বাপি দত্ত বলেন, “দলের কিছু নেতা ও দু-একজন কর্মী এই কাজে যুক্ত। উপরতলায় বিষয়টা জানানো হয়েছে।” মাটি পাচারের অভিযোগ মানতে রাজি নন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ত্রিলোকেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, “খালের মাটি বিক্রি হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়। সব মাটিই খাল সংস্কারে লেগেছে। তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকার প্রশ্নই উঠছে না” স্থানীয় কাউন্সিলরের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন রাজীববাবুও। সেচমন্ত্রী বলেন, “আমি বিষয়টা তদন্ত করে দেখেছি, অভিযোগ ঠিক নয়। কেউ প্রয়োজনে কিছু মাটি নিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু লরি করে মাটি পাচারের অভিযোগ ঠিক নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy