সামনেই জগদ্ধাত্রী পুজো। জোরকদমে তোরণ তৈরি চলছে শহরে। নিজস্ব চিত্র
শহর জুড়ে এখন তুমুল ব্যস্ততা। রাত জেগে চলছে কাজ। প্রতিমা তৈরি, মণ্ডপ তৈরি, আলোকসজ্জার দেখভাল— ফুরসত নেই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্যোক্তাদের। শহরের জিটি রোড, স্টেশন রোড-সহ বড় রাস্তাগুলিতে তোরণ তৈরির জন্য বাঁশের কাঠামোও মাথা তুলছে। সেই সব কাঠামো কতটা নিয়ম মেনে হচ্ছে, তা দেখতে শীঘ্রই পথে নামছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর আগে যানজট ও দুর্ঘটনা রুখতে তোরণ নিয়ে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়েও তা বহাল থাকছে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক) মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই নিষেধাজ্ঞা চন্দননগরের প্রতিটি পুজো কমিটিকেই মানতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে কোনও বিপদে না-পড়েন এবং অযথা যাতে যানজট না-হয়, সে কারণেই ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কোথাও রাস্তা বা ফুটপাত দখল করে তোরণ হলে সংশ্লিষ্ট পুজো উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘কমিশনারেটের ওই নির্দেশ সব বারোয়ারিকেই জানানো হয়েছে। এ শহরের খ্যাতি আলোর জন্য। তোরণে সেই আলো বেশি খোলে। কিন্তু তার জন্য কোথাও রাস্তা বা ফুটপাত দখল হচ্ছে কিনা, আমরাও খেয়াল রাখছি।’’
নামে ‘চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী’ হলেও এ পুজো উত্তরে চুঁচুড়ার কিছুটা এবং দক্ষিণে ভদ্রেশ্বরের অনেকটা জুড়ে হয়। জিটি রোডের যে কোনও প্রান্ত ধরে ঢুকলেই প্রতিবার দেখা যায় বড় বড় আলো বা বিজ্ঞাপনের তোরণ। এ বারও সেই নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার দুর্গাপুজোর আগেই চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট ঘোষণা করেছিল, তোরণের জন্য ফুটপাত বা রাস্তা দখল করা যাবে না। তিনটির বেশি তোরণ করতে গেলে বিশেষ অনুমতি লাগবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা এলাকা পরিদর্শন করে সেই অনুমতি দেবেন। ইতিমধ্যেই চন্দননগরের কিছু পুজো কমিটি তিনটির বেশি তোরণ তৈরির জন্য বিশেষ আবেদন জানিয়েছে বলে পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর।
কিন্তু তোরণে বিধিনিষেধ চন্দননগরের ক্ষেত্রে কতটা মানা হচ্ছে, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরবাসীর একাংশ অভিযোগ তুলছেন, ইতিমধ্যেই অনেক তোরণের কাঠামো নিয়ম বহির্ভূত ভাবে তৈরি হয়েছে। ফলে, পুজোর দিনগুলিতে যখন লক্ষাধিক মানুষ পথে নামবেন, তখন তাঁদের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, অটো, টোটো, মোটরবাইক, সাইকেলের ভিড়ে বিশৃঙ্খলা হতে পারে।
পুজো উদ্যোক্তাদের কেউ সে অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, নিয়ম মেনেই তোরণ হচ্ছে। পুজোর খরচ বহন করতে গেলে এখন আর শুধু চাঁদার উপরে নির্ভর করলে চলে না। বিজ্ঞাপন থেকে পুজোর খরচের অনেকটা তোলা হয়। আর সে জন্যই বিজ্ঞাপনের তোরণ তৈরি করতে হয়। উত্তর চন্দননগরের একটি পুজোর উদ্যোক্তা সূর্যশেখর দাসের দাবি, ‘‘অধিকাংশ তোরণই আলোর জন্য করা হয়। প্রশাসনের নির্দেশমতো মানুষের যাতায়াতের রাস্তা খোলা রেখেই তোরণ তৈরি করা হচ্ছে।’’ একই দাবি করেছেন স্টেশন রোড এলাকার এক পুজো উদ্যোক্তাও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তোরণও রাস্তা ছেড়েই করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন ছাড়া পুজো করা অসম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy