জমা জলে শুকিয়ে গিয়েছে লঙ্কা গাছ। ছবি: মোহন দাস।
বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই আরামবাগ মহকুমায় বহু কৃষিজমিতে জল জমে গিয়েছে। এক দিকে যেমন সব্জি চাষে সঙ্কট দেখা গিয়েছে, তেমনই ধান, পাট নিয়েও কপালে ভাঁজ পড়ছে চাষিদের।
মহকুমার বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা জানান, ইতিমধ্যে বহু খেতের সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে খানাকুলের দু’টি ব্লকে ইতিমধ্যেই ৮০ শতাংশ গ্রীষ্মকালীন এবং বর্ষাকালীন সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শশা প্রায় পুরোপুরি নষ্ট। ছাঁচি কুমড়ো, পালং, নটে-সহ বিভিন্ন শাক, শিম গাছের গোড়া পচে ঝিমিয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া বেগুন, ঝিঙে, পটল, উচ্ছে ইত্যাদি ফসলেরও সঙ্গিন অবস্থা।
উদ্যানপালন দফতরের জেলা আধিকারিক মানসরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বৃষ্টির জলে আরামবাগ মহকুমায় সব্জি চাষে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ঠিকই, তবে এখনই নষ্ট হয়েছে বলা ঠিক হবে না। আমরা সরেজমিনে তদন্ত করছি। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে ব্লক কৃষি আধিকারিকদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পরিষ্কার হবে।’’
ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমায় গ্রীষ্মকালীন এবং বর্ষাকালীন সব্জি চাষের মোট এলাকা প্রায় ১৮৮৩ হেক্টর। শীতকালীন সব্জি চাষ হয় প্রায় ৪৬০১ হেক্টরে। খানাকুলের দু’টি ব্লকের মধ্যে কিশোরপুর, বামনখানা, বন্দাইপুর, ঠাকুরানিচক, ধাড়াশিমূল, উদনা মাড়োখান, ইত্যাদি এলাকায় ব্যাপক সব্জি চাষ হয় বরাবর। কিন্তু এ বার বৃষ্টিতে সেই সব্জির অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চাষিরা। পুড়শুড়াতেও সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তুলনামূলক ভাবে আরামবাগের বাতানল এবং মায়াপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকা ছাড়া অন্য ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষতি ততটা হয়নি। গোঘাটের দু’টি ব্লকেও সব্জি চাষে ৭০ শতাংশের মতো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে ব্লক কৃষি দফতরগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে।
ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে আউস ধান, পাট চাষ এবং আমন ধানের বীজতলারও। মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আউস ধানের মোট এলাকা ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর। এই জমির অর্ধেক বৃষ্টির জলে ডুবেছে। অন্তত ৩০ শতাংশ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষি আধিকারিকেরাই। একই ভাবে পাটের ১৫৮৩ হেক্টর জমির অর্ধেকই জলমগ্ন। আমনের বীজতলার ক্ষেত্রে ৩০০ হেক্টরের মধ্যে ২৩৪ হেক্টরই জলে ডুবে নষ্টের মুখে। চাষিদের অধিকাংশই নতুন করে ফের বীজ ফেলেছেন। মহকুমা কৃষি আধিকারিক অশ্বিনী কুম্ভকার জানান, ধারাবাহিক বর্ষণের ফলে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির কিছু আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি দফতরকে বিষয়টি নিয়মিত জানানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy