অসহায়: সাইকেলের দোকানে কাজ করছেন অমূল্যবাবু
পেনশনের অঙ্ক খুব বেশি নয়। তাও মিলছে না নিয়মিত। ফলে, টান পড়ছে দৈনন্দিন খরচে। টাকার অভাবে বৃদ্ধ বয়সে সমঝোতা করতে হচ্ছে চিকিৎসার সঙ্গে। এই ছবি চাঁপদানি পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সংসারের। জীবন ধারণের জন্য ওই বৃদ্ধদের কেউ সাইকেল সারানোর দোকানে কাজ করছেন, কেই ফুটপাতে টুকিটাকি জিনিস বিক্রি করছেন। তাঁদের একটাই আর্তি, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে পেনশন মিটিয়ে দেওয়া হোক।
পেনশন প্রাপকদের ক্ষোভ, বেশ কয়েক মাসের টাকা মেলেনি। অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুর-প্রশাসক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র বলছেন, ‘‘এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। পুরনো বকেয়া অনেকটাই কমিয়ে আনা গিয়েছে। লকডাউনের জন্য পুরসভার অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হওয়ায় কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে, সেই সমস্যা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পুরসভার হিসেবে, বর্তমানে প্রায় ২৩০ জন পেনশন-প্রাপক আছেন। তাঁদের মধ্যে ভদ্রেশ্বরের শুঁড়িপাড়া বাইলেনের বাসিন্দা, ৮৫ বছরের প্রভাতকুমার ঘোষ ক্যানসারে আক্রান্ত। বছর দু’য়েক ধরে চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসার প্রয়োজনের কথা জানিয়ে আবেদন করায় কিছু দিন আগে তিন মাসের টাকা দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু এখনও ১০ মাসের টাকা বকেয়া। এ ভাবে চলে?’’ ১৯৫৬ সালে পুরসভা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন প্রভাতবাবু। অবসর নেন ১৯৯৫ সালে। দক্ষতার জন্য আরও কয়েক বছর অতিরিক্ত কাজ মেলে। তাঁর খেদ, ‘‘অনেকেই টাকার অভাবে সময়মতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পুরসভা একটু ব্যবস্থা করুক।’’
ভদ্রেশ্বর জগদ্ধাত্রীতলা লেনের বাসিন্দা নবতিপর মানিয়া বাঁশফোড় পুরসভার সাফাইকর্মী ছিলেন। ১৯৯০ সালে অবসর নেন। তিনি বলেন, ‘‘রেলের আবাসনে থাকি। ছেলে কাজ করে। তাই চলছে। পেনশনের টাকা নিয়মিত পেলে সমস্যা হত না। কারও কাছে হাত পাততে হত না।’’
ভোটের মুখে বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরা। স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঠিক সময়ে পেনশন না পেয়ে এখানকার কত মানুষ কষ্টে আছেন। কতটা অমানবিক হলে তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা যায়! এটা অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ।’’
জেলা সিটু নেতা তীর্থঙ্কর রায়ের কটাক্ষ, ‘‘প্রশাসন নাকি এখন মানুষের দুয়ারে! তা হলে এই মানুষগুলিকে পুরসভার কর্তাব্যক্তিদের দুয়ারে ঘুরতে হচ্ছে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy