নির্যাতন এবং খুনের অভিযোগ দায়ের হওয়ায় হিন্দমোটরের গৃহবধূ রূপা দাসের (২২) মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী প্রদীপকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবারই মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, কালো বলে রূপাকে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গঞ্জনা শুনতে হতো। এই অভিযোগের কথা জানতে পেরে মনোবিদরা একে ‘সামাজিক ব্যাধি’ বলেই মনে করছেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতেই মৃতার পিসতুতো ভাই তাপস পোদ্দারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রদীপকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া, রূপার শাশুড়ি, ননদ-সহ অভিযুক্ত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাঁরা পলাতক। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মিললে বধূর মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। শনিবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে মৃতার দেহের ময়না-তদন্ত হয়। এ দিনই ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বছর দেড়েক আগে কানাইপুর বাঁশাই কলোনির বাসিন্দা রূপার সঙ্গে হিন্দমোটর-২ নম্বর বাজার এলাকার যুবক প্রদীপের বিয়ে হয়। প্রদীপ সব্জি বিক্রি করেন। শুক্রবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা রূপাকে মৃত অবস্থায় উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ প্রদীপের এক মামা তাঁদের ফোনে জানান, প্রদীপ অসুস্থ অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে প্রদীপকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। প্রদীপ সেখানে দাবি করেন, রূপা আত্মঘাতী হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে আসে। প্রদীপকে আটক করা হয়।
রূপার পিসতুতো ভাই তাপসের অভিযোগ, ‘‘কালো বলে দিদির ননদ-নন্দাইরা কেউ পছন্দ করত না। গঞ্জনা দিত। ওদের দেখাদেখি জামাইবাবুও অশান্তি শুরু করে। কম পণ দেওয়ার জন্যেও অশান্তি হতো।’’ রূপার বাবা তারক কুণ্ডু বলেন, ‘‘দেখাশোনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। ওরা সবাই মিলে আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলল।’’
এ জাতীয় অভিযোগ অবশ্য নতুন নয় বলে জানিয়েছেন মনোবিদরা। মনোবিদ মোহিত রনদীপ বলেন, ‘‘সুশ্রী না হলে শ্বশুরবাড়িতে গঞ্জনা শোনাটা মেয়েদের কাছে দস্তুর। এতে সেই মেয়েরা অকারণেই আত্মগ্লানিতে ভোগেন। তাঁদের মধ্যে হতাশা আসে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কি হয়েছিল, তা তদন্তসাপেক্ষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy