হাতে হাত। উলুবেড়িয়ায় বৃহস্পতিবার বিজেপি-র রোড-শোতে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়(বাঁ দিকে)। দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুব্রত জানা।
সবুজ পাড় বাসন্তী শাড়িতে এক জন ছোট ট্রাকে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরলেন। অগণিত সাধারণ মানুষের সঙ্গে হাত মেলালেন।
অন্য জন শুধু সভা করলেন। তোপ দাগলেন সেই সবুজ পাড়, বাসন্তী শাড়ির মহিলাকেই। তুললেন গ্রেফতারের দাবিও।
উলুবেড়িয়া পুর-নির্বাচনে বৃহস্পতিবারের প্রচার আরও তীব্র হল বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যেপাধ্যায়ের সৌজন্যে।
এ দিন রূপাদেবী ‘রোড শো’ করলেন শহরের নানা এলাকায়। তাঁর আসার কথা ছিল বেলা ৩টে নাগাদ। আগে থেকেই কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক ভিড় করেন গরুহাটা মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে। রূপা আসেন সওয়া সতটা নাগাদ। তত ক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। ভিড় বেড়েছে বই, কমেনি। তাঁকে নিয়ে ২০টি ছোট ট্রাকের ওই ‘রোড শো’ শুরু হয় ও টি রোড থেকে।
তার কিছু ক্ষণ আগে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ডোমপাড়ায় দলীয় প্রার্থী ইনামুর রহমানের সমর্থনে জনসভায় বক্তৃতা করতে হাজির হন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যেপাধ্যায়। কলকাতার গোপালনগরে গোলমালের জন্য রূপাদেবীকেই দায়ী করে রাজীববাবু তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন। রাজীববাবু বলেন, ‘‘রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এখানে রোড শো’র নামে গোলমাল পাকাতে এসেছেন। গোপালনগরে আমাদের দলের পতাকা ছিঁড়ে দিয়ে একই ভাবে তিনি গোলমাল পাকান। আমাদের দলীয় পতাকা টাঙানো নিয়ে তাঁর যদি সে রকম আপত্তি থাকে, তা হলে তাঁর উচিত ছিল নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনকে জানানো। তা না করে তিনি নিজেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দিলেন। এ জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত।’’ অবশ্য শুধু এতেই থামেননি সেচমন্ত্রী। রূপাদেবীর অভিনেত্রী-সত্তাকেও কটাক্ষ করেছেন। সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘রূপাদেবী অভিনেত্রী হিসেবে বরাবরই কাঁচা। এখন দেখা যাচ্ছে রাজনীতির প্রযোজিকা হিসেবেও কাঁচা। গোলমাল পাকানোর উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি যে সব নাটক করছেন, সেগুলি কেউই সমর্থন করছেন না। এক সময়ে তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বামপন্থীদের বহু সভা-মিছিলে তাঁকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। এখন আবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বলে যে ঘোষণা করেছিলেন, তারও সমালোচনা করেন রাজীববাবু।
সেচমন্ত্রী যখন এ ভাবে মঞ্চে তোপ দাগছেন, তখন ওটি রোড হয়ে চেঙ্গাইল, বাউড়িয়া-সহ নানা এলাকায় গড়িয়েছে রূপাদেবীর ট্রাকের চাকা। ছোট ট্রাকগুলিকে বিজেপির দলীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়। রূপাদেবী উলুবেড়িয়ায় আসার পরেই বিজেপি কার্যালয়ে সামনেই জড়ো হয়ে যান বহু সাধারণ মানুষও। দেরিতে আসার জন্য রূপাদেবী প্রথমেই দুঃখপ্রকাশ করেন। তাঁকে দেখার জন্য মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁর ট্রাক যত এগিয়েছে, তত রাস্তার দু’ধারে ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে মহিলাদের উৎসাহ ছিল দেখার মতো। তাঁকে স্পর্শ করার জন্য অনেক মহিলাই এগিয়ে আসেন। রূপাদেবী কাউকেই নিরাশ করেননি। সকলের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছেন।
রাত পর্যন্ত চলে ‘রোড শো’। এ দিন বক্তৃতা করেননি রূপাদেবী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল যে সব অভিযোগ তুলছে, তা উড়িয়েই দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি তো কোনও পতাকা ছিঁড়িনি বা মাড়াইনি।’’
ছবি: সুব্রত জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy