Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘অপহরণে’ অভিযুক্ত তৃণমূল প্রধানের ভাই

ঋণ শোধ করতে না পারায় এক যুবককে অপহরণের অভিযোগ উঠল আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ভাই-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। আরামবাগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর বাইশের শেখ ইব্রাহিম নামে ওই যুবক গত ৩ এপ্রিল থেকে নিঁখোজ। ওই দিন বিকেলে তিনি সাইকেলে করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। পরে তাঁর সাইকেলটি পাওয়া যায় ওই ওয়ার্ডেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৫
Share: Save:

ঋণ শোধ করতে না পারায় এক যুবককে অপহরণের অভিযোগ উঠল আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ভাই-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। আরামবাগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর বাইশের শেখ ইব্রাহিম নামে ওই যুবক গত ৩ এপ্রিল থেকে নিঁখোজ। ওই দিন বিকেলে তিনি সাইকেলে করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। পরে তাঁর সাইকেলটি পাওয়া যায় ওই ওয়ার্ডেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে। কিন্তু তাঁর আর সন্ধান মেলেনি। শেখ ইব্রাহিমের মা ফতেমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শেখ রফিকুল ইসলাম নামে এক দোরজির দোকানের মালিককে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত কাজি কাঞ্চন এখনও অধরা। কাজি কাঞ্চন তিরোল পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা কাজি নিজামুদ্দিনের ভাই। তার বাড়ি স্থানীয় পুইন গ্রাম। পুলিশ জানিয়ছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। মূল অভিযুক্ত কাজি কাঞ্চন পলাতক। তাকে ধরার জন্য তল্লাশি চলছে।

অন্যদিকে, কাজি নিজামু্দ্দিন জানান, ভাই ইব্রাহিমের কাছ থেকে টাকা পেত এটা ঠিক। তবে তার নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ভাইয়ের কোন যোগ নেই। মিথ্যা অভিযোগের জেরে তাঁর সম্মানহানি হচ্ছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে তাঁর বাইও ইব্রাহিমের খোঁজ করছে। তবে নিজামুদ্দিনের দাবি, ইব্রাহিম নিজেই গা ঢাকা দিয়েছে। ভাইয়ের কাছে তিনি শুনেছেন, যতজনের কাছে ইব্রাহিম টাকা নিয়েছিল প্রত্যেককেই ৪ এপ্রিল টাকা শোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অথচ ৩ তারিখ থেকেই সে উধাও হয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইব্রাহিম শহরের ছায়াবানী (সিনেমা হল)পাড়ার একটি দোরজির দোকানে কাজ করতেন। পাশাপাশি চালের পাইকারী ব্যবসাও ছিল তাঁর। গত ৩ এপ্রিল দুপুরে প্রতিদিনের মতো বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করতে আসেন। খাওয়া দাওয়া সেরে ফের বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ সাইকেলে দোকানে রওনা দেন। রাত সাড়ে ৯টায় বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সাড়ে ৮টা নাগাদ দোকানের মালিক শেখ রফিকুল ইসলাম ইব্রাহিমের বাড়ির মোবাইল ফোনে ফোন করে জানতে চান ইব্রাহিম বাড়ি ফিরেছে কি না। কারণ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তাঁর দোকান থেকে সে বেরিয়ে যায়। এরপর ইব্রাহিমের মোবাইলে ফোন করা হলে দেখা যায় তাঁর ফোন বন্ধ। রাতেই আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছায়াবানী পাড়ায় গিয়ে দোকানের মালিক রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে সম্ভাব্য কিছু জায়গায় খোঁজ করলেও ইব্রাহিমকে পাওয়া যায়নি। রাতেই থানায় ছেলের নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ করেন ফতেমা বেগম। পরের দিন সকালে ছেলের ব্যাপারে ওয়ার্ডের তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ছেলের সাইকেলটি সেখানে দেখতে পান তিনি।

ফতেমা বেগমের অভিযোগ, পার্টি অফিসে ছেলের সাইকেল দেখে নেতাদের জানতে চাই ছেলে কোথায় ? কিন্তু তারা কেউ জানে না বলে জানায়। ছেলের সাইকেল ওখানে কী ভাবে এল তারও উত্তর দিতে পারেনি তারা। ওই দিনই কাজি কাঞ্চন-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে ছেলেকে অপহরণ করে আটকে রাখার অভিযোগ দায়ের করেন ফতেমা। ফতেমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ এপ্রিল পুলিশ দোরজির দোকানের মালিক শেখ রফিকুলকে গ্রেফতার করে।

তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে নিখোঁজ ইব্রাহিমের সাইকেল কী করে এল সেই প্রশ্নে ওই কার্যালয়ের পরিচালক তথা তৃণমূল নেতা রাজেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘সাইকেলটা বাইরে রাস্তায় পড়েছিল। কেউ নিয়ে যেতে পারে ভেবে আমাদের ছেলেরা ঘরে ঢুকিয়ে রাখে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE