Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

সুরক্ষা উড়িয়ে জেল থেকে উধাও বন্দি

পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মমাফিক এ দিন বন্দিদের গুনতির সময়ে দেখা যায়, এক বন্দি কম। খবর নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, নিখোঁজ ওই বন্দির নাম শেখ ইসরাইল।

পলাতক: জেলের এই পাঁচিল পেরিয়ে পালিেয় যায় শেখ ইসরাইল (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

পলাতক: জেলের এই পাঁচিল পেরিয়ে পালিেয় যায় শেখ ইসরাইল (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

কাঠ, বাঁশ, লাঠি জোগাড় করে ২০ ফুটের মই বানিয়ে হাওড়া জেলা সংশোধনাগারের বাইশ ফুট উঁচু পাঁচিল টপকে এর আগে পালিয়ে ছিল বিচারাধীন দুই বন্দি। সে প্রায় দশ বছর আগের কথা। সেই স্মৃতিই যেন বুধবার ফের ফিরে এল জেল চত্বরে। এ বার সংশোধনাগারের রেন ওয়াটার পাইপ ভেঙে তা দেওয়ালে লাগিয়ে পাঁচিল টপকে পালালেন আর এক বিচারাধীন বন্দি। রাতে নয়, প্রকাশ্য দিবালোকে। বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওড়া মল্লিক ফটকের জেলা সংশোধনাগার চত্বরে শোরগোল পড়ে যায়। সতর্ক করা হয় রাজ্যের সব থানাকে। তবে রাত পর্যন্ত পলাতক বন্দির খোঁজ মেলেনি। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নে জেলের নিরাপত্তা।

পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মমাফিক এ দিন বন্দিদের গুনতির সময়ে দেখা যায়, এক বন্দি কম। খবর নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, নিখোঁজ ওই বন্দির নাম শেখ ইসরাইল। বাড়ি হুগলির চণ্ডীতলার মামুদপুরে। শ্বশুরবাড়ি ডোমজুড়ে। স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গত জুলাই মাসে ইসরাইলকে গ্রেফতার করেছিল ডোমজুড় থানা। আদালতের নির্দেশে তিনি গত দু’মাস জেল হেফাজতে রয়েছেন।

হাওড়া জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে আসার পর থেকে সুপারের অফিস সাফসুতরো করার কাজ পেয়েছিলেন ইসরাইল। এ দিনও সুপারের ঘরে কাজ করতে যান তিনি। কিন্তু সকাল ১০টা নাগাদ আসামিদের গুনতির সময়ে দেখা যায়, এক জন কম। সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইলের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়। সে সময়েই জেলের কর্মীদের চোখে পড়ে, উত্তর দিকের পাঁচিলে দেওয়ালের গায়ে একটি বড় পাইপ লাগানো। পাশেই টাটকা পায়ের ছাপ। পায়ের ছাপ দেখা যায় বাইরের দিকের দেওয়ালেও। তখনই বন্দি পালানোর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। এর পরেই জেলের সাইরেন বেজে ওঠে। খবর পৌঁছয় পদস্থ কারাকর্তাদের কাছে। ছুটে আসেন ডিআইজি (কারা) বিপ্লব দাস-সহ অন্য আধিকারিকেরা। তদন্তে নামে হাওড়া সিটি পুলিশও।

শেখ ইসরাইল

মল্লিক ফটকের কাছে জেলের সামনে এ দিন গিয়ে দেখা যায়, ভিড় করে রয়েছেন বন্দিদের আত্মীয় ও এলাকার বাসিন্দারা। যে পাঁচিল টপকে ইসরাইল পালিয়েছেন, সেখানে সরেজমিন তদন্ত করছেন কারা দফতরের কয়েক জন কর্তা এবং ডিআইজি (কারা) বিপ্লববাবু নিজে। তিনি বলেন, ‘‘আজ গুনতির সময়ে দেখা যায়, এক জন বন্দি কম। তার পরেই তল্লাশি শুরু হয়। জেলের সিসি ক্যামেরায় পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে। রাজ্যের সব থানাকে ওই বন্দির ছবি পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।’’

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, জেলের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে ওই বন্দি পালালেন কী ভাবে? এ বিষয়ে বিপ্লববাবুর বক্তব্য, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তবে জেলের অন্য বন্দিদের আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরের খাবার পৌঁছে দিতে এসে তাঁরা অনেকেই এক ব্যক্তিকে পাঁচিল টপকে পালাতে দেখেছেন। ওই ঘটনার জেরে এ দিন অন্য বন্দিদের দুপুরের খাবার দেওয়া বন্ধ রাখা হয়। হয়রানির শিকার হন তাঁদের আত্মীয়েরা। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁদের জেলের গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

অন্য বিষয়গুলি:

Escape Inmate Jail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE