অভিযোগের তীর রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়ের দিকে।
নিজের প্রাণহানির আশঙ্কা করে হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিলেন বালির নিহত তৃণমূল নেতা তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। চিঠিতে প্রতিমাদেবী জানিয়েছেন, স্বামীর খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করার পর থেকেই তিনি হুমকি ফোন পাচ্ছেন। গত ১২ মার্চ তিনি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রাণাডেকে ওই চিঠি দেন তিনি। জলাভূমি ভরাটের প্রতিবাদ করায় ২০১১ সালের ৬ মে বালি লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে গুলি করে খুন করা হয়েছিল তপনবাবুকে।
চিঠিতে প্রতিমাদেবী জানিয়েছেন, বেশ ক’দিন ধরেই কয়েক জন অচেনা যুবক পশ্চিম শান্তিনগর সাঁপুইপাড়ায় তাঁর বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছে। কখনও হেলমেটে মুখ ঢেকে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ির কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকছে, কখনও বা গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছে। প্রতিমাদেবীর অভিযোগ, ওই যুবকদের বেশির ভাগই তাঁর অপিরিচিত হলেও, তাদের দলে এলাকার এক পরিচিত দুষ্কৃতীও রয়েছে। সেই দুষ্কৃতী তপনবাবুর ভাই বিজু দত্ত খুনের ঘটনায় জড়িত ছিল।
শনিবার প্রতিমাদেবী বলেন, “আমার স্বামীও বারবার পুলিশকে তাঁর প্রাণসংশয়ের কথা জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে খুন হতে হয়েছিল। আমিও পুলিশকে আমার আশঙ্কার কথা জানিয়েছি।” প্রতিমাদেবী জানান, হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে তাঁকে এক জন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই রক্ষীর কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ফলে তাঁর দক্ষতার উপরে পুরোপুরি ভরসা করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি, তিনি আরও অভিযোগ করেন, তপন দত্ত খুনের মামলায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। এই মামলা করার পর থেকেই বিভিন্ন হুমকি ফোন আসতে শুরু করে। বর্তমানে আদালতে শুনানি শেষ হয়ে গিয়েছে। রায়দান স্থগিত রয়েছে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে লেখা চিঠিতে প্রতিমাদেবী অভিযোগ করেছেন, মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের নির্দেশে এবং স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতে তপনবাবুকে দুষ্কৃতীরা নির্মম ভাবে খুন করে। এখন আবার যদি তাঁর কোনও ক্ষতি হয়, তবে তার দায় অরূপবাবু এবং পুলিশের উপরেই বর্তাবে।
অরূপ রায় অবশ্য বলেন, “তপনবাবু যখন প্রাণহানির আশঙ্কা করেছিলেন, আমিই তখন পুলিশ সুপারকে ওঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলাম। প্রতিমাদেবীর বিষয়েও আমি পুলিশ কমিশনারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” অরূপবাবু আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে প্রতিমাদেবী যা বলছেন, তার বিচার আদালতেই হবে। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রতিমাদেবীকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। উনি যে সব অভিযোগ করেছেন, সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয়, নিরাপত্তা বাড়ানো যেতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy