মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। জ্বরও হচ্ছিল ঘরে ঘরে। তাই মশা ঠেকাতে আবর্জনায় প্রায় বুজে আসা একটি দেড় কিলোমিটার লম্বা খাল সংস্কারের কাজে হাত দিল হাওড়া পুরসভা। হাওড়া পুর এলাকায় ডেঙ্গি রুখতে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের আওতায় শতাধিক পুকুরের আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ আগেই শুরু করেছিল পুরসভা। এ বার ওই প্রকল্পের আওতায় এলাকায় মশার আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত বকুলতলা-নাজিরগঞ্জ খাল সংস্কারের কাজ শুরু করায় সেখানে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমবে বলেই দাবি পুরকর্তাদের।
গত বছরের তুলনায় হাওড়া পুর এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ কম হলেও বর্তমানে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। মহকুমা হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি ছাড়াও হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে জ্বরের রোগীর সংখ্যা নিত্যদিন বাড়ছে। এই অবস্থায় শহরের জলাশয়গুলিকে পরিষ্কার করে সেগুলির সংরক্ষণে জোর দিয়েছেন পুরকর্তারা।
হাওড়া পুরসভার ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ অরুণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পুকুর সংস্কার করে হাওড়ায় ডেঙ্গি অনেকটাই রোখা গিয়েছে। তাই মশাবাহিত রোগের উপদ্রব রুখতে ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে এ বার খাল সংস্কার শুরু হল।’’
অরুণবাবু জানান, সোমবার হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ স্থানীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে ওই খাল সংস্কারের কাজ দেখতে যান। অরুণবাবুর মতে, নাজিরগঞ্জ থেকে বকুলতলা পর্যন্ত ওই খালটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল। দুই পাড়ই চলে গিয়েছিল বেআইনি দখলদারদের কব্জায়। ওই দখলদারেরা বাড়ির সমস্ত আবর্জনা ও মলমূত্র ওই খালেই ফেলতেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল খালের দু’পাড়ের অসংখ্য অবৈধ খাটাল। সেই সব খাটালের বর্জ্যও সরাসরি খালে পড়ত। তাই খালটি প্রায় বুজে যেতে বসেছিল। দুর্গন্ধ আর কচুরিপানায় খালটি মশার বংশবৃদ্ধির আদর্শ জায়গা হয়ে গিয়েছিল।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই খাল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ঠিক হয়েছে, আবর্জনা ও কচুরিপানা সরানোর পরে ট্র্যাক্টর দিয়ে পাঁক তোলার কাজ শুরু হবে। চেষ্টা করা হবে যতটা সম্ভব নাব্যতা বৃদ্ধি করার। পুরসভার বক্তব্য, খাল সংস্কার সাধারণত রাজ্য সরকারের সেচ দফতর করে থাকে। কিন্তু এলাকায় দূষণ ও মশার উপদ্রব খুব বেড়ে যাওয়ায় পুরসভাই এ কাজে হাত দিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আবর্জনা পরিষ্কারের পরে বিশাল এই খালটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সমস্ত জল পাম্প করে ফেলে দিয়ে নতুন পরিষ্কার জল ঢোকানো হবে। পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের কাজও করা হবে। সাজানো হবে খালের দু’পাড়।
কিন্তু বেআইনি দখলদারেরা থাকলে সংস্কারের কাজ হবে কী করে?
মেয়র পারিষদ অরুণবাবু বলেন, ‘‘ওই দখলদারদের পাশ নিয়ে ট্র্যাক্টর নামিয়ে পাঁক তোলার কাজ হবে। যদি একান্তই না পারা যায় তখন বিষয়টি ওপরতলায় জানানো হবে। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন কী করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy