Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus Lockdown

ফের সঙ্কট হুগলি শিল্পাঞ্চলে, এ বার কাজ বন্ধ ওয়াগন কারখানায়

শ্রমিকদের বিক্ষোভ দানা বাঁধছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

কারখানার গেটের সামনে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

কারখানার গেটের সামনে ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:৪৫
Share: Save:

আমপান-দুর্যোগের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিপন্নতার কালো মেঘ হুগলি শিল্পাঞ্চলের আকাশে। ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর কবলে পড়ল এখানকার আরও একটি কারখানা।

ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শেড ও যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য গত শুক্রবার থেকে শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটিতে একটি লোহার যন্ত্রাংশ তৈরির একটি কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার কাজ বন্ধের নোটিস পড়ল ‘হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’ নামে ডানকুনির বামুনারিতে রেলের ওয়াগন তৈরির কারখানায়। এই নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ দানা বাঁধছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বন্ধ হওয়া ওই কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় আটশো শ্রমিক আছেন। লকডাউনের শুরু থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। প্রশাসনের অনুমতি মেলায় গত ১৮ মে থেকে কারখানা খোলার কথা বলা হয়। এ দিন কারখানা বন্ধের বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষের দাবি, অধিকাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দেননি। তার উপরে পাঁচ শ্রমিক কারখানার গেটের সামনে আন্দোলন করে বিশৃঙ্খলা করেছেন। লাঠি, রড নিয়ে ইচ্ছুক শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দিয়েছেন। খুব কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে উৎপাদন চালানো সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতেই ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়েছে।

কারখানা সূত্রের খবর, লকডাউন-পর্বে রোজগারহীন থাকায় স্থায়ী শ্রমিকরা এককালীন অনুদান চেয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দেননি। শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, আমপানের জেরে উদ্ভুত পরিস্থিতি এবং সোমবার ইদের কারণে কাজে যোগ দেওয়ার পরিস্থিতি ছিল না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিকদের উপরে একতরফা দোষ দিয়ে কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন কারখানার গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখান।

কারখানার আইএনটিটিইউসি ঠিকাশ্রমিক সংগঠনের সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, গত জানুয়ারি মাস থেকে নতুন চুক্তি মোতাবেক ঠিকা-শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। মার্চের বেতন দেওয়া হয়নি। ইদের বোনাসও দেওয়া হয়নি। অন্বয়ের কথায়, ‘‘জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির বর্ধিত টাকা, মার্চের বেতন মেটানো হোক। প্রাপ্য না দিয়ে শ্রমিকদেরই চাপে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ কারখানার সিটু সভাপতি অসীম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবিলম্বে লকডাউন-পর্বের জন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা শ্রমিকদের দেওয়া হোক। সাসপেনশন অব ওয়ার্ক প্রত্যাহার করা হোক। কাল, বৃহস্পতিবার ডেপুটি-শ্রম কমিশনারকে এই নিয়ে আমরা চিঠি দেব।’’

কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, লকডাউন পর্বে উৎপাদন না হওয়ায় প্রচুর লোকসান হয়েছে। তাই অনুদান দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। তবে, শ্রমিকদের পাঁচ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলি মানেনি। ঠিকা শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন এক সপ্তাহ আগেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লিঙ্ক সংক্রান্ত গোলমালে সকলের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছয়নি। আর চুক্তি মোতাবেক তাঁদের বর্ধিত টাকা অবশ্যই দেওয়া হবে। আমপানে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। মেরামতে অনেক টাকা খরচ। যা পরিস্থিতি তাতে আরও দু’মাস লাভ হবে না বলেই মনে হচ্ছে।

বাঙ্গিহাটির কারখানার সমস্যা সমাধানে আজ, বুধবার শ্রীরামপুরে শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy