Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
COVID-19

হাওড়ায় করোনা বৃদ্ধির শঙ্কা

ভেম্বর-ডিসেম্বরে সংক্রমণ যে অনেকটাই বেড়ে যাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নুরুল আবসার 
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০০:৪৬
Share: Save:

রাস্তাঘাট, দোকান-বাজার বা গণ-পরিবহণে সুরক্ষা-বিধি প্রায় মানাই হচ্ছে না। তাই, আগামী দু’মাসে হাওড়ায় লাগামছাড়া হতে পারে করোনা সংক্রমণ। এই আশঙ্কা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরই। ফলে, করোনা মোকাবিলায় ফের নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

এখন জেলার ‘সেফ হোম’গুলিতে রোগী নেই বললেই চলে। সুস্থতার হার বেড়ে যাওয়ায় কোভিড হাসপাতালের শয্যাও অনেক খালি। কিন্তু সেইসব পরিকাঠামো গুটিয়ে নেওয়ার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা। নভেম্বর-ডিসেম্বরে সংক্রমণের ধাক্কা এলে তার মোকাবিলায় ওইসব পরিকাঠামো ঠিকঠাক আছে কিনা তা ফের দেখে নেওয়া নেওয়া হচ্ছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’’

কেন সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা?

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তাদের একাংশের মত, আনলক-পর্বে দেখা যাচ্ছে, প্রায় কেউই বিধিনিষেধ মানছেন না। মানুষ পথেঘাটে এমন ভাবে ঘুরছেন, যেন করোনা উধাও হয়ে গিয়েছে! শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা কার্যত উঠে গিয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরছেন না। বাসগুলিতে যাত্রিসংখ্যা বেঁধে দেওয়ার যে বিধি প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপানো হয়েছিল, তা চৌপাট হয়ে গিয়েছে। চলতি মাসে দুর্গাপুজো রয়েছে। খুলছে সিনেমা হল, বিনোদন পার্ক। এইসব কারণে সংক্রমণ ফের বাড়তে পারে।

রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের প্রকাশিত তথ্যে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম পনেরো দিন হাওড়ায় দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল গড়ে দেড়শো। সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে তা বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে গড়ে দু’শোর কাছাকাছি।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, অগস্ট মাস পর্যন্ত শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, রাস্তায় ভিড় যাতে না হয় তার উপরে পুলিশের নজরদারিতে বেশ কড়াকড়ি ছিল। ফলে, দৈনিক সংক্রমণ কমছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে সব কিছু যেন বাঁধনছাড়া হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, কারখানাগুলিতেও ভিন্‌ রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা এসে যোগ দেন। যাঁদের অনেকেরই পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়ে।

জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে জনজীবনে নিয়ম মানার ক্ষেত্রে যে শিথিলতা দেখা দেয়, তারই ফল হল মাসের শেষ পনেরো দিনে সংক্রমণের দৈনিক হার বেড়ে যাওয়া। অক্টোবর থেকে সিনেমা হল, বিনোদন পার্কে ভিড় বাড়বে। উৎসবের ভিড়ও বাদ যাবে না। সব মিলিয়ে যেটা হবে, তার ফলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে সংক্রমণ যে অনেকটাই বেড়ে যাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’’ তিনি এটাও জানিয়েছেন, আনলক-পর্বে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে আসবে, এটাই কাম্য ছিল। কিন্তু যা দরকার ছিল, তা হল সংক্রমণ ঠেকাতে যে সব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেগুলি কঠোর ভাবে মেনে চলা। তা হলে কোনও বিপদ থাকে না। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। ভিড়ের মাঝে উপসর্গহীন সংক্রমিত সকলের সঙ্গে মিশছেন। তা থেকে অন্যদের মধ্যেও সংক্রমণ নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে। এটা আটকাতে বিধিনিষেধ মেনে চলার উপরে কঠোর নজরদারি চালানো উচিত বলে তিনি মনে করেন।

জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত। বিধিনিষেধগুলি মেনে চলার জন্য উৎসবের মরসুমে কড়া নজরদারি চালানো হবে। একই সঙ্গে মানুষের সচেতনতা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE