একই চাষিকে ব্লকের সেরা কৃষক হিসেবে দু’বার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে উলুবেড়িয়া ২ নম্বর ব্লকে। বিরোধীদের তরফে ব্লক প্রশাসন, কৃষি দফতরে অভিয়োগও জমা পড়েছে। তাদের দাবি, জোয়ারগড়ি পঞ্চায়েত এলাকার চাষি সনাতন ময়রা ২০১৪ সালে ব্লকের সেচা চাষি হিসেবে কৃষক রত্ন পেয়েছেন। চলতি বছরেও তাঁকে পুরস্কৃত করা হল। বিরোধীদের প্রশ্ন, ব্লকে আরও অনেক ভাল চাষি আছেন। তার পরেও শুধু একজনকেই দু’বার কৃষকরত্ন দেওয়া হচ্ছে কেন? বিরোধীদের বক্তব্য এই ভাবে একজনকে দুবার এই পুরষ্কার দেওয়ার ফলে অন্য ভালো কৃষককে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উলুবেড়িয়া ২-এর বিডিও দেবব্রত রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠিয়ে দেব।’’
কী ভাবে এই কৃষকরত্ন বাছা হয়? হাওড়া জেলা কৃষি কর্তাদের বক্তব্য, এই কৃষকরত্নের জন্য নাম মনোনীত করে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি। তাঁরাই নাম পাঠায় ব্লক কৃষি দফতরের কাছে। ব্লক কৃষি দফতর সেই নাম জেলা কৃষি দফতরের কাছে পাঠায়। পরে তা রাজ্য সরকারের কাছে যায়। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার এক কৃষি কর্তা বলেন, ‘‘একই ব্যক্তিকে দু’বার কৃষকরত্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু সেই পুরস্কার ব্লকের ভাল চাষিদের মধ্যে ঘুরিয়ে ভাগ করে দিলে চাষিদের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে। এটাই এই পুরস্কারের লক্ষ্য। এ ছাড়া চাষিদের বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে কি না সেটাও দেখা হয়।’’
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সনাতনবাবু মূলত ধান, পান চাষ করেন। এ ছাড়া এলাকায় ভাল মাছ চাষি হিসেবে পরিচিত। তবে এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য চাষের কোনও একটি ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের প্রয়োজন। যা দেখে অন্যরা উৎসাহিত হতে পারেন। সেই ধরণের কোনও কৃতিত্ব তাঁর নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, সনাতনবাবু সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বেবী মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ। ফলে তাঁর ইচ্ছাতেই সনাতনবাবুর নাম দু’বার মনোনীত হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের ক্ষীপ্রতীম মণ্ডল বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে এটা করা হয়েছে। কারণ, ব্লকে অনেক ভাল চাষি আছেন। যাঁরা অনেক অভিজ্ঞ। তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করব।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে বেবী মণ্ডল বলেন, ‘‘উনি ভাল চাষি বলেই প্রশাসন তিনি ফের পুরস্কার পেয়েছেন। এতে আমার কোনও হাত নেই।’’ সনাতনবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘চাষবাসের ক্ষেত্রে আমার সুনাম রয়েছে। তবে আমাকে কেন দু’বার পুরস্কার দেওয়া হল, তা প্রশাসন জানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy