ফাইল চিত্র
৭৮৪টি নয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে হাওড়া জেলায় ৬৪১টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালু হতে চলেছে।
প্রথমে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল হাওড়ায় ৭৮৪টি প্রাথমিক স্কুলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালু হবে। কিন্তু তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, এমন সব স্কুল সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে, যাদের উপযুক্ত পরিকাঠামো বা প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই। বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হওয়ায় ফের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর। তাতে স্কুলের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৪১টি। এই স্কুলগুলিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন হবে বলে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
তা হলে কিসের ভিত্তিতে আগের তালিকা তৈরি হয়েছিল?
রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, কোন কোন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পঠন-পাঠন চালানো যাবে তা নিয়ে বিভিন্ন জেলা স্কুল পরিদর্শককে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছিল। তাঁদের দেওয়া তালিকা থেকেই স্কুলগুলি নির্বাচন করা হয়। মানিকবাবু এই দাবি করলেও, তাতে যে ফাঁক ছিল, তা বোঝা যায় প্রথম তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে। প্রথম তালিকায় যে স্কুলগুলি ছিল, সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের পঠনপাঠন শুরু করানোর জন্য ডেকে পাঠান ৩৩টি চক্রের স্কুল পরিদর্শকেরা (এসআই)। সেখানেই বহু স্কুল জানিয়ে দেয়, তাদের পঞ্চম শ্রেণিতে পঠনপাঠনের কোনও পরিকাঠামো নেই। শিক্ষকেরও অভাব আছে। সেই রিপোর্ট বিভিন্ন চক্রের এসআই-রা জমা দেন জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শককে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশিত হয়। যাতে দেখা যায়, প্রথম তালিকায় নাম ছিল এমন ১৪৩টি স্কুল বাদ পড়েছে।
কেন এমন হল, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তা নিয়ে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক বাদল পাত্রের বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের-ও। তবে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের দফতরের একাধিক কর্তা জানিয়েছেন, প্রথম পর্বের সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন চক্রের এসআই-দের। সমীক্ষায় যদি গাফিলতি হয়েও থাকে, তা তাঁদেরই। অভিযোগ, তাঁদের একাংশ ঘরে বসে সমীক্ষার কাজটি করেছিলেন। তার ফলেই অনেক অনুপযুক্ত স্কুল তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি কোনও এসআই।
আবার যোগ্য স্কুলকে তালিকায় না-আনার অভিযোগও উঠেছে। বাগনান-১ ব্লকের বাইনান হাই অ্যাটাচ্ড প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামো যথেষ্ট উন্নত। শিক্ষকের সংখ্যাও পর্যাপ্ত। এই স্কুল একাধিকবার জেলা এবং ব্লকে সেরার পুরস্কার পেয়েছে। প্রধান শিক্ষক নির্মল মজুমদার বলেন, ‘‘প্রথম তালিকাতেও আমাদের স্কুল পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ানোর সুযোগ পায়নি। দ্বিতীয় তালিকাতেও বঞ্চিত হয়েছে। এটা কী ধরনের সমীক্ষা হল, বুঝতে পারছি না।’’ এই অভিযোগ নিয়েও জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক বা এসআই-দের বক্তব্য মেলেনি।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেন্ড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি তথা আমতার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিন্টু পাড়ুইয়ের দাবি, ‘‘শুধু তালিকা তৈরিতেই অনেক দিন সময় চলে গেল। আমরা চাই চূড়ান্ত ভাবে যে স্কুলগুলি নির্বাচিত হয়েছে, সেখানে পঞ্চম শ্রেণি চালু করার জন্য স্পষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হোক। কারণ, শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর দেরি নেই।’’ এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের দফতরের এক কর্তা জানান, বিশেষ কোনও গাইডলাইনের দরকার নেই। চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত স্কুলগুলি ছাত্র ভর্তি করাতে পারে। যারা ভর্তি হল, তাদের তালিকা পাঠিয়ে দিলেই বই দিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy