৯২ বছর বয়সে প্রয়াত দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, দেশের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পুরোধাপুরুষ মনমোহন সিংহ প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
বয়সজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁকে ভর্তি করানো হয় দিল্লি এমসে। রাত ৮টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। রাতে হাসপাতালেই প্রয়াত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের প্রধান মুখ হিসাবে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন মনমোহন। ২০১৪ সালে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের কাছে ইউপিএ পরাজিত হলে ক্ষমতায় আসেন নরেন্দ্র মোদী। এ ছাড়া, পিভি নরসিংহ রাও পরিচালিত সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন মনমোহন।
২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কোভিডে আক্রন্ত হন তিনি। হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়েছিল। তবে সেই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার পর থেকে শরীর কমবেশি অসুস্থই ছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার মনমোহনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছে যান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। দিল্লি এমসে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডাও।
দিল্লি এমসের তরফে জানানো হয়েছে, বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাড়িতেই হঠাৎ সংজ্ঞা হারান তিনি। রাত ৮টা ৬ মিনিটে তাঁকে দিল্লি এমসের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক দলের সব রকম চেষ্টার পরেও তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। রাত ৯টা ৫১ মিনিটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দিল্লি এমস।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত কয়েক বছর ধরে সক্রিয় রাজনীতির থেকে দূরেই ছিলেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে শেষ বার জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। নিজ কন্যার একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
অতীতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর থেকেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের মন্ত্রিসভায় অর্থ মন্ত্রকের গুরু দায়িত্ব সামলেছেন। চলতি বছরেই তাঁর রাজ্যসভার সাংসদ কালের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেশি রাতের দিকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ দিল্লি এমসের থেকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর প্রয়াণে কংগ্রেস সাত দিনের জন্য সব দলীয় কর্মসূচি বাতিল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্নাটক সরকার ইতিমধ্যে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। কর্নাটক মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে সে রাজ্যের সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, শুক্রবার সরকারি সব কর্মসূচি বন্ধ রাখতে পারে মোদী সরকার। ১১টায় বৈঠকে বসবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, দলের সমস্ত কর্মসূচি সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনও সেই মতো এ বছর বাতিল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সাত দিন সর্বত্র দলের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। ৩ জানুয়ারি থেকে দলীয় কর্মসূচি পুনরায় চালু হবে।
কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে কর্নাটকে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ অন্য নেতারা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণের খবর পেয়ে রাতের বিমানেই দিল্লিতে ফিরেছেন তাঁরা। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেশি রাতের দিকে দিল্লিতে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েছেন রাহুল এবং খড়্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy