Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
হাওড়ায় নিদান পুলিশের

মণ্ডপে রাখতে হবে সিসিটিভি

উরির স্মৃতি এখনও টাটকা। তার উপর জঙ্গিদের নাগাড়ে হুমকি। তাই সব রকম সতর্কতাতেই জোর দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। যার পদক্ষেপ হিসাবে পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপের ভিতরে সিসিটিভি-র ব্যবস্থা করতে বলেছে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ।

বাগনান খালোড় যুবসঙ্ঘের মণ্ডপ। ছবি: সুব্রত জানা।

বাগনান খালোড় যুবসঙ্ঘের মণ্ডপ। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৪
Share: Save:

উরির স্মৃতি এখনও টাটকা। তার উপর জঙ্গিদের নাগাড়ে হুমকি। তাই সব রকম সতর্কতাতেই জোর দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। যার পদক্ষেপ হিসাবে পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপের ভিতরে সিসিটিভি-র ব্যবস্থা করতে বলেছে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। তবে মূলত বিগ বাজেটের পুজোগুলির জন্যই এই নিদান দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, বিগ বাজেটের পুজোগুলি দেখতে প্রচুর ভিড় হয়। তাই দুষ্কৃতীদের নজর থাকে এই মণ্ডপগুলির দিকেই। এই অবস্থায় ভিড়ের সুযোগ নিয়ে দর্শনার্থীদের মধ্যে থেকে কেউ যদি নাশকতামূলক কাজ করে, সিসি টিভি-র সাহায্যে তাকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। তা ছাড়া ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রাখা খরচসাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে বড় পুজো কমিটিগুলি ছাড়া ওই খরচ বহন করা সম্ভব নয়।

পুজোর আগে বিভিন্ন থানায় পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে বৈঠকে এই কথা জানানো হয়। পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক বড় পুজো কমিটিই মণ্ডপে সিসি টিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। যেমন ডোমজুড়ের বাঁকড়া সুভাষপল্লি ক্ষুদিরাম স্মৃতি সংঘ। এই ক্লাবের পুজোর বাজেট এ বার প্রায় ১২ লক্ষ। মেট্রো রেলের আদলে মণ্ডপ। ক্লাবের তরফে সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘আমাদের পুজো দেখতে প্রচুর মানুষ আসেন। প্রতিবছরই আমরা মণ্ডপের বাইরে সিসিটিভি বসাই। কিন্তু পুলিশের অনুরোধ পেয়ে এ বছর মণ্ডপের ভিতরে সিসিটিভি বসাচ্ছি। এতে বাড়তি খরচ হলেও নিরাপত্তার বিষয়টিও ফেলনা নয়।’’

মণ্ডপে সিসিটিভির ব্যবস্থা ছাড়াও থাকছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাত পাহারার ব্যবস্থা। এ বছর আবার পুজো এবং মহরম পড়ে গিয়েছে গায়েগায়ে। বিভিন্ন থানায় পুজো এবং মহরম উদযাপন কমিটিগুলিকে নিয়ে শান্তি বৈঠক করেছে পুলিশ। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ঘাটতি যাতে না থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ণব বিশ্বাস বলেন, উৎসবের আনন্দ মানুষ উপভোগ করুন নিশ্চিন্তে। তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা করা হয়েছে।’’

পুজোয় একটা বড় চ্যালেঞ্জ যান নিয়ন্ত্রণ। বাগনান, ডোমজুড়, আমতা, উলুবেড়িয়ার মতো জায়গায় প্রচুর দর্শনার্থী পুজো দেখতে বের হন। ভিড়ের চাপে যাতে যানজট না হয়, দুর্ঘটনা না ঘটে তা দেখার জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে। এ জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপে রাতপাহারা ও যান নিয়ন্ত্রণ—দু’টি দায়িত্বে জেলায় মোতায়েন থাকবেন ৩৯৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার। কোনও অঘটন ঘটলে দর্শনার্থীরা যাতে দ্রুত মণ্ডপের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন সে জন্য পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপে ঢোকা-বেরোনোর পথ চওড়া করতে বলা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন থানার অফিসার ও পুলিশ কর্মী ছাড়াও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকছেন অতিরিক্ত ৪৫ জন অফিসার এবং ১৭৭ জন কনস্টেবল ও হোমগার্ড। থাকছে ২০ সেকশন রাফ। প্রতি সেকশনে থাকেন ৬ জন। মহিলাদের প্রতি অশালীন ব্যবহার রুখতে প্রচুর সংখ্যায় সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ থাকবে। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন সাদা পোশাকের পুলিশও।

পুরো পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে থাকছেন জেলার পদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন ৮ জন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার।

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV Puja Pandals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE