Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

থমথমে আরামবাগে বিজেপির শোক-মিছিল

রবিবার সকালে শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কালীপুর মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে পিটিয়ে-কুপিয়ে লকাইকে খুন করা হয়। তারপরেই তেতে ওঠে ওই ওয়ার্ড, পাশের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং সংলগ্ন এলাকা।

কালীপুরে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপি নেতারা।

কালীপুরে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপি নেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১৭
Share: Save:

নতুন করে আর কেউ গ্রেফতার হয়নি। বিজেপি কর্মী আমির আলি খান ওরফে লকাই খুনের ঘটনায় সোমবারও থমথমে ছিল আরামবাগ শহর। এ দিন ফের একটি তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। লকাইয়ের মৃতদেহ নিয়ে দুপুরে শোক-মিছিল করে বিজেপি সব অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি তোলে।

রবিবার সকালে শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কালীপুর মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে পিটিয়ে-কুপিয়ে লকাইকে খুন করা হয়। তারপরেই তেতে ওঠে ওই ওয়ার্ড, পাশের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং সংলগ্ন এলাকা। বুধবার আরামবাগ বিধানসভা এলাকায় ১২ ঘণ্টার বন‌্ধ ডাকে বিজেপি। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কৃষ্ণ বারিক-সহ বহু তৃণমূল কর্মী ঘটনার পরেই ঘরছাড়া হন। রবিবারেই তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং একটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। রাতে ময়নাতদন্তের পরে লকাইয়ের দেহ এলাকায় ফিরলে ফের সেখানকার কিছু তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। সোমবার সকালে ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাতলার একটি তৃণমূল কার্যালয়েও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিরুদ্ধে।

জনরোষেই এ সব হামলা বলে দাবি বিজেপির। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং বিষ্ণুপুরের দলীয় সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এ দিন নিহতের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁদের নেতৃত্বেই শোক-মিছিল হয় ১২ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। গোলমালের আশঙ্কা থাকায় পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাফ মোতায়েন ছিল। সায়ন্তনবাবু বলেন, ‘‘শহরের প্রাণকেন্দ্রে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী তরোয়াল দিয়ে যে ভাবে আমাদের কর্মীকে খুন করেছে, তা যে কোনও সভ্য সমাজকে লজ্জা দেবে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা তলানিতে ঠেকেছে।’’ সব অপরাধীকে ধরার দাবিতে সায়ন্তনবাবু পুলিশকে হুঁশিয়ারিও দেন। সৌমিত্রবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড গণতন্ত্রের লজ্জা। এখানে আমাদের এক কর্মীর স্ত্রী বিধবা হলেন। মুখ্যমন্ত্রী কালীঘাটে বসে দেওয়ালি করছেন।’’

দুই বিজেপি নেতার অভিযোগ শুনে এ দিন ফের জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আরামবাগের সচেতন মানুষ এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যের উত্তর দেবেন। পাড়াগত ঝগড়ায় এক খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক রং চাপিয়ে সারা আরামবাগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে ওরা।’’

খুনের ঘটনায় মোট অভিযুক্ত ১১ জন। তাদের মধ্যে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইয়াকুব আলি, তার ছেলে আব্বাস আলি এবং টগরী বিবি ও ছবি বিবি নামে ওই দলেরই দুই কর্মীকে রবিবারই পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতদের সোমবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ইয়াকুব ও তার ছেলেকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং দুই মহিলাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানান, বাকি অভিযুক্তদের ধরতে চিরুনি-তল্লাশি চলছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Aramba
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE