খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ এক যুবকের গায়ে হাত দিয়ে পরীক্ষা করার অনুরোধ করেছিলেন রোগীর স্ত্রী। অভিযোগ, তা অস্বীকার করেন চিকিৎসক। ওই মহিলার দাবি, কর্কশ ভাবে চিকিৎসক বলেন দেন, ‘‘বুকে-পেটে হাতে বোলালেই রোগী ভাল হয়ে যায় না।’’ পর দিন ভোরে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। আর তারপরই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে।
শনিবার সকাল থেকে মৃতের আত্মীয় পরিজনেরা হাসপাতালে জমায়েত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢুকে টেবিল-চেয়ার উল্টে দেওয়া হয়। তছনছ করা হয় কাগজপত্র, ওষুধও। অভিযুক্ত চিকিৎসক ওয়ার্ডে এলে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। মারধরও করার উপক্রম করেন মৃতের পরিজনেরা। কোনও ক্রমে হাসপাতাল ছেড়েছেন ওই চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডায়েরিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন স্থানীয় মাদ্রা গ্রামের বাসিন্দা বদরে আলম (৩০)। তখনই তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃতের স্ত্রী আর্জিনা বেগমের অভিযোগ, “শুক্রবার সকালে ডাক্তারবাবু এলে তাঁকে অনুরোধ করি একটু গায়ে হাত দিয়ে ভাল করে পরীক্ষা করে দেখতে। কিন্তু উনি গায়ে হাতই ঠেকালেন না। উল্টে দুর্ব্যবহার করলেন।’’ পরিবারের দাবি, ঠিক মতো চিকিৎসা হলে মরতে হত না ওই যুবককে।
হাসপাতাল সুপার শিশির নস্কর বলেন, “চিকিৎসার কোনও গাফিলতি ছিল না। বিষক্রিয়ায় ওই যুবকের অবস্থা প্রথম থেকেই সঙ্কটজনক ছিল। তবে ওই চিকিৎসক যে রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, তা আমরা জানতে পেরেছি। সে কারণে শুক্রবারই ওই রোগীর দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি।’’
এ দিকে হাসপাতালের অনেকেই বলছেন, যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তিনি রোগী দরদী ও সুচিকিৎসক বলে পরিচিত। বছর খানেক আগে সর্পদষ্ট এক শিশুকে কৃত্রিম শ্বাস প্রক্রিয়ার মধ্যে রেখে বাঁচিয়ে তুলেছিলেন তিনি। মহকুমা হাসপাতাল স্তরে সেটা ছিল একটা দৃষ্টান্ত।
এ দিন সকালে রোগীর পরিবারের হাতে হেনস্থা হওয়ার পর থেকে তাঁকে আর হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ। হাসপাতাল সুপারের দাবি, বহির্বিভাগ ও অন-কল ডিউটি থাকা সত্ত্বেও ওই চিকিৎসক হাসপাতালে আসেননি। এতে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে রোগী ও কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে ঘনিষ্ট মহলে ওই চিকিৎসক জানিয়ে গিয়েছেন, ‘‘অকারণে সারাক্ষণ মার খাওয়ার আতঙ্ক নিয়ে আর যাই হোক চিকিৎসা হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy