Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জলে পাঁচ পঞ্চায়েত, বিপাকে পরীক্ষার্থী

গত শনিবার থেকে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। তার জেরে হুগলির আরামবাগ মহকুমা এবং হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতায় প্লাবনের আশঙ্কা করেছিল সেচ দফতর। মঙ্গলবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। তবে, বেঁচে গিয়েছে আমতা। কী অবস্থা দুর্গতদের? খোঁজ নিল আনন্দবাজার।সোমবার শুরুটা হয়েছিল কুর্চি-শিবপুর পঞ্চায়েত দিয়ে। মঙ্গলবার তার সঙ্গে যুক্ত হল রামপুর-ডিহিভুরসুট-আসন্ডা, কানুপাট-মনসুখা, সিংটি এবং হরালি-উদয়নারায়ণপুর।

জল ডিঙিয়ে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন ছাত্রী।ছবি:সুব্রত জানা

জল ডিঙিয়ে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন ছাত্রী।ছবি:সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১০
Share: Save:

সোমবার শুরুটা হয়েছিল কুর্চি-শিবপুর পঞ্চায়েত দিয়ে।

মঙ্গলবার তার সঙ্গে যুক্ত হল রামপুর-ডিহিভুরসুট-আসন্ডা, কানুপাট-মনসুখা, সিংটি এবং হরালি-উদয়নারায়ণপুর।
ডিভিসি-র ছাড়া জল দামোদরের বাঁধ টপকে ভাসিয়ে দিল উদয়নারায়ণপুরের পাঁচ পঞ্চায়েত এলাকাকে। মোট ১৬২ জন দুর্গতকে নিচু এলাকা থেকে তুলে এনে টোকাপুর প্রাথমিক স্কুল, হরিহরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঘোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে রাখার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। তাতে দুর্গতেরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও বিপাকে পড়েছেন কলেজের পরীক্ষার্থীরা। কারণ, রাস্তা যে জলের তলায়!
সেচ দফতর সূত্রের খবর, শনিবার থেকে ডিভিসি জল ছাড়তে শুরু করে। ওইদিন তারা ৬৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত এক লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়ে তারা। মঙ্গলবার সকালে জল ছাড়ার পরিমাণ অবশ্য কমিয়ে ৮০ হাজার কিউসেক করা হয়।
সেচ দফতরের এক কর্তা জানান, জল ছাড়ার পরিমাণ যেমন ডিভিসি কমিয়েছে, অন্যদিকে বৃষ্টিও থেমেছে। ফলে, বন্যার বাড়াবাড়ির আশঙ্কা নেই। তবে, সোমবার পর্যন্ত ডিভিসি যে হারে জল ছেড়েছিল, তারই জের চলছে এখন। আমতা-২ ব্লক যাতে নতুন করে প্লাবিত না হয়, সে জন্য সেচ দফতরের পক্ষ থেকে এ দিন রামপুর খাল, হুড়হুড়িয়া খালের বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ব্লক প্রশাসন কার্যালয় থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ তদারক করেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪০ জনের একটি দল এসে ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। রাজ্য পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৮ জনের একটি দলও কাজ করছে। আটটি সালতি নৌকা এবং দু’টি স্পিডবোট রয়েছে উদ্ধারকাজের জন্য। বিধায়ক বলেন, ‘‘ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পরিস্থিতি দেখতে এ দিন উদয়নারায়ণপুরে আসেন জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস, উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অংশুল গুপ্ত এবং সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়।
পরীক্ষাকেন্দ্রের রাস্তা জলের তলায় চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কলেজ পরীক্ষার্থীরা। গত ১৭ অগস্ট থেকে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পাস ও অনার্সের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমতা রামসদয় কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আসন পড়েছে উদয়নারায়ণপুরের মাধবীলতা মহাবিদ্যালয়ে। কিন্তু মঙ্গলবার কলেজে যাওয়ার রাস্তা ডুবে যায়। ফলে পরীক্ষার্থীদের হাঁটু জল ভেঙে পরীক্ষা দিতে যেতে হয়।
বিশ্বজিৎ মণ্ডল নামে এক যুবক বলেন, ‘‘আমার শ্যালিকা হাঁটুজল ভেঙে কোনওমতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পেরেছে। কিন্তু ফেরার সময়ে কী হবে বুঝতে পারছি না!’’
মাধবীলতা মহাবিদ্যালয় সূত্রের খবর, এখানে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন করে ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিতে আসছেন। বন্যার আশঙ্কা করে আগেই কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিবর্তন করার অনুরোধ করা হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, আজ বুধবার থেকে এই কেন্দ্রের বদলে আমতার রসপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত বিএড কলেজে আমতা রামসদয় কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে। এখন জল কবে নামে, তারই অপেক্ষা।

অন্য বিষয়গুলি:

distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE