Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ-হেফাজতে মৃত্যুতে ওসি-কে ‘ক্লোজ’

শ্লীলতাহানির অভিযোগে বাউড়িয়া থানার পুলিশের হাতে ধৃত সানোয়ার আলির মৃত্যুতে ওসিকে ‘ক্লোজ’ করা হল। ওই যুবকের মৃত্যুতে শনিবারই থানা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়-পরিজন এবং পড়শিরা। লক-আপে সানোয়ারকে পেটানো হয় এবং তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতি করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন বিক্ষোভকারীরা। রাতেই শিবপুর পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয় বাউড়িয়া থানার ওসি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়কে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাউড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০১:৫৪
Share: Save:

শ্লীলতাহানির অভিযোগে বাউড়িয়া থানার পুলিশের হাতে ধৃত সানোয়ার আলির মৃত্যুতে ওসিকে ‘ক্লোজ’ করা হল।

ওই যুবকের মৃত্যুতে শনিবারই থানা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়-পরিজন এবং পড়শিরা। লক-আপে সানোয়ারকে পেটানো হয় এবং তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতি করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন বিক্ষোভকারীরা। রাতেই শিবপুর পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয় বাউড়িয়া থানার ওসি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়কে।

হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হিরা বলেন, “পুলিশ-হেফাজতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে তদন্তের স্বার্থে ওসিকে নিয়ম মেনেই ক্লোজ করা হয়েছে।”

বাউড়িয়া থানা অবশ্য লক-আপে মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল। তাদের দাবি, শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারের পরে সানোয়ার থানায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় দু’বার করে তাঁকে ফোর্ট গ্লস্টার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সানোয়ারকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা সানোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন। একই দাবি করেন জেলার পুলিশ-কর্তারাও। তাঁরা অবশ্য জানান, পুলিশ-হেফাজতে মৃত্যু হলে আইনানুযায়ী যা করণীয় সবই করা হবে। থানার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত হবে। তবে, রবিবার বিকেল পর্যন্ত বাউড়িয়া থানার পুলিশের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

সানোয়ার আলি ওরফে মইদুল নামে বছর বাইশের ওই যুবক জরির কারিগর ছিলেন। বাউড়িয়ারই একটি বন্ধ সুতোকলের আবাসনে থাকতেন। শুক্রবার সকালে পাশের বাড়ির বছর তেরোর এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে মইদুলের বিরুদ্ধে। নাবালিকার পরিবারের সদস্যেরা কিছু লোকজন নিয়ে মইদুলের বাড়িতে চড়াও হন। বাড়িটিতে ভাঙচুর চালানো হয় এবং মইদুল ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। বিকেলে নাবালিকার পরিবারের লোকজনই মইদুলকে থানায় ধরে এনে অভিযোগ দায়ের করেন। তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন মইদুল। তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবারের পক্ষ থেকে পাল্টা ওই নাবালিকার পরিবারের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের হওয়ায় পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে এক মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে।

মইদুলের শ্বশুর শেখ রফিক বলেন, “জামাই নির্দোষ। মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়। ওকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। লক-আপেও নিস্তার মেলেনি। তার জন্যই ও মারা গেল। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, শুক্রবার নাবালিকার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মইদুলকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি। এমনকী, পরিবারের লোকজনের একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও অসুস্থ মইদুলকে প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়নি পুলিশ। অভিযোগ মানেনি পুলিশ। গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূল নেতা বেণু সেনের মদত রয়েছে,, এই অভিযোগে শনিবার বিক্ষোভের পরে থানার অদূরে বেণুবাবুর বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়।

অভিযোগ নস্যাৎ করে দেন বেণুবাবু। তাঁর দাবি, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। আমিই মইদুলের পরিবারের লোকজনকে থানায় নিয়ে গিয়ে ওই নাবালিকা পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে সাহায্য করেছি। অকারণে বাড়িতে হামলা চালানো হল।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE