'নমামি গঙ্গে'র প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪০ ফুট গর্ত খুঁড়ে কাজ চলায় একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। চুঁচুড়ার পিপুলপাতি কদমতলা এলাকায়। ছবি: তাপস ঘোষ।
‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল চুঁচুড়ার পিপুলপাতি-কদমতলায়। যার জেরে একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরার অভিযোগ উঠল। রবিবার, খবর পেয়ে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মেজাজ হারালেন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারকে তুলোধোনা করে কর্মীদের কাজ বন্ধ করালেন। ফোনে কেএমডিএ-র আধিকারিককে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি মেরামত না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে।
বিধায়কের ধমকের মুখে পড়ে কেএমডিএ-র থেকে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার আফসার মল্লিক বলেন, ‘‘চলতি মাসের মধ্যেই বাড়িগুলি মেরামতের কাজ শেষ করা হবে।’’
বছর দেড়েকের বেশি সময় ধরে চুঁচুড়ায় ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের কাজ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা খুঁড়ে নিকাশির পাইপ বসানো হয়েছে। পিপুলপাতিতে প্রায় ৪০ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে চৌবাচ্চা তৈরি করা হয়েছে। শহরে মোট দু'টি চৌবাচ্চা হওয়ার কথা। নিকাশির জল সেই চৌবাচ্চাগুলিতে জমা হবে। সেখান থেকে ভূগর্ভস্থ পাইপের সাহায্যে তা পৌঁছে যাবে তালডাঙায় ‘সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টে’। সেখানে নিকাশির জলকে পরিষ্কার করে তুলাপট্টি ঘাট থেকে গঙ্গায় ফেলা হবে।
বছর খানেক আগে পিপুলপাতির ওই চৌবাচ্চা তৈরির শুরুতেই প্রকল্পের গা ঘেঁষে থাকা একটি টিনের ঘর হেলে পড়ে বলে অভিযোগ। সেই ঘরের বাসিন্দারা কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন। তাঁদের জন্য একটি ভাড়াবা্ড়ির ব্যবস্থা করে দেয় নির্মনকারী সংস্থাই। ভাড়াও তারাই দেয় বলে জানান ওই পরিবারের কর্তা অতুল মাল।
সেই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন, বাঁশের খুঁটির কাঁচাবাড়ি বলে হয়তো ওই বিপত্তি। কিন্তু দিন চারেক আগে পিপুলপাতি-কদমতলায় বাড়ির ভিত থেকে মাটি সরে যাওয়া প্রথমে নজরে আসে স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী বরুণ দাসের। পরের দিনই দেখা যায় প্রতিবেশীর উঠোনেও ফাটল। আশপাশের প্রায় ছ'টি বাড়ির একই অবস্থা। কোনওটার দেওয়ালে ফাটল ধরেছে তো কোনওটার ভিত বরাবর ফাটল।
বরুণের কথায়, ‘‘বস্তা-বস্তা মাটি এনেও ফাটল আটকাতে পারছি না। পাশের বাড়ির দেওয়ালেও ফাটল ধরতে শুরু করেছে। আতঙ্কে দিন কাটছে।’’
এইচআইটি কলেজের প্রাক্তনী, ইঞ্জিনিয়ার রুদ্রেন্দ্রপ্রসাদ পাকড়াশি জানান, এই ধরনের কাজে ভাল করে মাটি পরীক্ষা না করলেই সমস্যা। কারণ, মাটির প্রকৃতির উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। তাঁর ব্যাখ্যা, মাটি খোঁড়ার সময় কম্পনের ফলে পাশের স্তরের মাটিতে ধস নামতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভিতের নীচে ধস নামলে উপরে থাকা কংক্রিটের বাড়ি বসতে শুরু করবে। কিন্তু সমান ভাবে বসবে না। তাই ফাটল ধরবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy