Advertisement
E-Paper

নায়েকরা ব্যস্ত ভোটের কাজে, প্রত্যাশিত বায়না অমিল যাত্রাদলের

হতাশ ‘শিল্পী তীর্থ অপেরা’র মালিক অভিজিৎ রায়ও। তিনি বলেন, “এ বার বায়নার সূচনাতেই ধাক্কা। করোনা পর্বের দু’বছর বাদ দিলে প্রতি বছর রথের দিনেই গড়ে ২৫-৩০টি করে বায়না হয় আমাদের।

Theatre Group

ভিড় কম যাত্রা দলের অফিসের সামনে। মঙ্গলবার গোঘাটের কামারপুকুরে। —নিজস্ব চিত্র।

পীযুষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৩ ০৮:২৪
Share
Save

চলতি বছর পঞ্চায়েত ভোটে ব্যস্ত নায়েকরা। তাই রথের দিন গোঘাটের কামারপুকুরের যাত্রা দলগুলি প্রত্যাশিত বায়না পেল না। কামারপুকুর চটিতে দলগুলির অস্থায়ী অফিস প্রায় শূন্য রইল সারা দিন। বায়নার সূচনাতেই এমন বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগে স্থানীয় ১৭টি দলের কলাকুশলীরা।

টানা ৪৮ বছর ধরে যাত্রার সঙ্গে যুক্ত গণেশ অপেরার মালিক এবং নায়ক সব্যসাচী মৌলিকের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে অনেকে ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকায় এই বিপত্তি। যে সব কমিটি বা নায়েকরা পালা বায়না করতে আসেন, তাঁরা সব ভোটের কাজে ব্যস্ত।”

হতাশ ‘শিল্পী তীর্থ অপেরা’র মালিক অভিজিৎ রায়ও। তিনি বলেন, “এ বার বায়নার সূচনাতেই ধাক্কা। করোনা পর্বের দু’বছর বাদ দিলে প্রতি বছর রথের দিনেই গড়ে ২৫-৩০টি করে বায়না হয় আমাদের। এ দিন বড়জোর গড়ে ৪-৬টি করে বায়না হয়েছে।’’ একই কথা জানিয়েছেন ‘নিউ রায় অপেরা’র মালিক তথা নায়ক শান্তি রায়। তিনি জানান, রথের দিনের বায়না সাধারণত কালীপুজো পর্যন্ত হয়। সারা বছরে প্রায় ২০০ পালার বায়না পাওয়া যায়।

পুরশুড়া বিমল হাটি নামে এক জন নায়েক নিজেকে তৃণমূল-অনুগামী বলে দাবি করে বলেন, “আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। আজ অনয কাজে যাওয়া যায়? নেতাদের সঙ্গে ঘুরতে হচ্ছে। বিরোধী কেউ মনোনয়ন তুলতে চাইলে তাঁকে ব্লক অফিসে পৌঁছে, ফের বাড়ি পৌঁছতে হচ্ছে।” যে কয়েক জন হাতেগোনা লোকজন বায়না করতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে বর্ধমানের বাঘারগ্রামের অমিত মিত্র বলেন, “আমাদের ওখানে ভোট নিয়ে তেমন তাপ-উত্তাপ নেই। তাই এসেছি।’’

কামারপুকুরের যাত্রা দল শতাব্দী প্রাচীন। অতীতে প্রায় পঞ্চাশটি দল থাকলেও বর্তমানে আছে ১৭টি। কলাকুশলী প্রায় ৩৫০ জন। বরাবরের প্রথা মেনে রথের দিন যাত্রাপালার বায়না নেওয়া শুরু হয়। সকাল ৮টা থেকে কামারপুকুর চটিতে বিভিন্ন অপেরার অস্থায়ী অফিসগুলিতে যাত্রাপালা বায়না করতে আসেন নায়েকরা। করোনার জেরে ২০২০-২১ সালে কোনও বায়না ছিল না। কলাকুশলীরা কেউ আনাজ বিক্রি, কেউ দিনমজুরি করে সংসার চালিয়েছেন। ২০২২ সালে অবশ্য রথের দিন বায়না পেয়েছিলেন প্রায় ২৫-৩০টি করে। দলগুলির ক্ষোভ, এমনিতে আগের মতো যাত্রার চাহিদা নেই। তার উপরে গ্রামীণ যাত্রা-শিল্পকে চাঙ্গা করার মতো সরকারি কোন উদ্যোগও নেই।

তবে গোঘাট-২ বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে ও শিল্পীদের সহায়তায় সরকারি লোকপ্রসার প্রকল্প আছে। প্রকল্পের আওতায় এখানকার যাত্রা শিল্পীদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকলে তাঁরা ব্লকে আবেদন করতে পারেন। প্রশাসন তাঁদের পাশে রয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Theatre Group

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}