বিধ্বস্ত: সোমবারের ঝড়ে ভেঙে পড়া একাধিক গাছ। বুধবার, বটানিক্যাল গার্ডেনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
কালবৈশাখীর স্থায়িত্ব ছিল মাত্র মিনিট পাঁচেক। আর তাতেই কার্যত লন্ডভন্ড হাওড়ার শিবপুরের ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ভারতীয় উদ্ভিদ উদ্যান’ বা বটানিক্যাল গার্ডেনের একাংশ। আমপানের স্মৃতি উস্কে, গত সোমবারের ওই ঝড়ে উদ্যানে অন্তত ৪০টি গাছ উপড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি বিরল প্রজাতির গাছও। ডালপালা ভেঙেছে ১০০টিরও বেশি গাছের। প্রচুর বিরল উদ্ভিদের ক্ষতি হয়েছে। উদ্যান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বয়স্ক গাছগুলির ডালপালা না ছাঁটায় গাছের কাণ্ডের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে কারণেই এমন অবস্থা। ঝড় দীর্ঘস্থায়ী হলে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারত বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
২০২০ সালের ২০ মে বিধ্বংসী আমপানে ওই উদ্যানের প্রায় দু’হাজার ছোট-বড় গাছ উপড়ে গিয়েছিল। পড়ে যাওয়া সেই সব গাছ সরাতে বহু সময় লেগেছিল। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে গত তিন বছরে প্রায় চার হাজার নতুন গাছ বসিয়েছেন উদ্যান কর্তৃপক্ষ। আরও পাঁচ হাজার গাছ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সোমবারের কালবৈশাখীতে ফের তছনছ হয়ে গিয়েছে উদ্যান। ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে আসা ওই ঝড়ে ৪০টিরও বেশি বড় গাছের কোনওটি মাঝ বরাবর ভেঙে গিয়েছে, কোনওটি আবার সমূলে উপড়ে এসেছে। তাদের মধ্যে রয়েছে কদম, জারুল, নিম, জামুন, মেহগনি, আমলা, রাধাচূড়া, রে ট্রি ইত্যাদি। ডালপালা ভেঙেছে ১০০টিরও বেশি গাছ ও বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের।
শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেনের যুগ্ম-অধিকর্তা দেবেন্দ্র সিংহ জানান, ঝড়ে যে উদ্যানের গাছপালার এতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা প্রথমে আন্দাজ করা যায়নি। কিন্তু মঙ্গলবার উদ্যানে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, ক্ষয়ক্ষতির এমন বহর মনে পড়িয়ে দিচ্ছে আমপানের স্মৃতি। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘মূলত দেখা যাচ্ছে, বয়স্ক গাছগুলির বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ, দীর্ঘ তিন দশক ধরে ওই গাছগুলির ডালপালা ছাঁটার কাজ হয়নি। ফলে গাছগুলির উপরের দিকের অংশ ভারী হয়ে যাওয়ায় কাণ্ড ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল। তাই ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে।’’ দেবেন্দ্র আরও জানাচ্ছেন, এই কারণেই এ বার উদ্যানের বয়স্ক গাছগুলির রক্ষণাবেক্ষণের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে সেগুলির ডালপালা ছাঁটা হবে এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে সংরক্ষণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ মিনিটের ঝড়েই উদ্যানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা ঠিক করতে আরও দিন দশেক লাগবে। কারণ উদ্যানের অনেক রাস্তায় ভাঙা গাছ, ডালপালা পড়ে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy