Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২০২৬-এর মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা
Second Ishwar Gupta Setu

দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতু নিয়ে আশায় দু’পার

গঙ্গার পশ্চিম প্রান্তে হুগলির মগরার সঙ্গে পূর্ব প্রান্তের নদিয়ার বড়জাগুলির সংযোগ স্থাপন করবে ওই সেতু। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে এলাকার অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন হবে বলে দু’পারের বাসিন্দারাই আশাবাদী।

পুরনো সেতুর পাশেই দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর কাজ চলছে।

পুরনো সেতুর পাশেই দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর কাজ চলছে। ছবি: তাপস ঘোষ।

সুদীপ দাস
বাঁশবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৮:২১
Share: Save:

জমি-জটে বছর দেড়েক কাজ থমকে ছিল। জট কেটেছে। কাজে গতিও এসেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আড়াই বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যা রাজ্যের দীর্ঘতম সেতুর তকমাও পেতে চলেছে।

গঙ্গার পশ্চিম প্রান্তে হুগলির মগরার সঙ্গে পূর্ব প্রান্তের নদিয়ার বড়জাগুলির সংযোগ স্থাপন করবে ওই সেতু। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে এলাকার অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন হবে বলে দু’পারের বাসিন্দারাই আশাবাদী। ২০১৬ সালে সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে দু’পারেই সংলগ্ন এলাকাগুলিতে জমির দামও বাড়ছে বলে জানান স্থানীয়েরা।

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৯৭৫ সালে তৈরি এ রাজ্যে ফরাক্কা সেতুই এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম (সাড়ে ১৬ কিলোমিটার)। দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর বিস্তার হচ্ছে ২১ কিলোমিটারেরও বেশি। ৩৫ মিটার চওড়া সেতুতে মোট ৬টি লেন হওয়ার কথা। পূর্ত দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগম নির্মাণকাজ করছে।

পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘মোট ১৩৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি হচ্ছে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ শেষ হবে। এই সেতু রাজ্যে পরিবহণ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটাবে। অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন হবে।’’

বর্তমানে যে জায়গায় সেতুটি তৈরি হচ্ছে, তার ঠিক পাশেই রয়েছে পুরনো ঈশ্বরগুপ্ত সেতু। সেটি দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করলেও ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। নতুন সেতুটি চালু হওয়ার পরে পুরনো সেতুটির কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য পূর্ত দফতর এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

নিগম সূত্রের খবর, ডেনমার্কের একটি সংস্থা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর আদলে দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর নকশা করেছে। এখানেও দু'প্রান্তের উঁচু পিলারের সঙ্গে থাকা কেব্‌ল সেতুটিকে টেনে ধরে রাখবে। পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছে খড়গপুর, চেন্নাই ও কানপুর আইআইটি৷ দেশের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ নকশায় ভূমিকম্পের বিষয়টিতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

হুগলির মগরা, ত্রিবেণী, বাঁশবেড়িয়া, বড়পাড়া এবং নদিয়ার কল্যাণী, বড়জাগুলি-সহ আশপাশের এলাকায় শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রেও এই সেতুর গুরুত্ব বাড়ছে৷ আশপাশের আরও এলাকাকে নানা মাপের উড়ালপুল দিয়ে যুক্ত করা হবে এই সেতুর সঙ্গে৷ উড়ালপুলগুলি হবে চার থেকে ছয় লেনের৷ সেতুটির সঙ্গেই সংযোগ গড়তে তৈরি হবে বাঁশবেড়িয়া রেল ওভারব্রিজও৷

হুগলির দিল্লি রোড এবং গঙ্গার পূর্বে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যেও সংযোগ স্থাপন করবে নতুন সেতু৷ নিবেদিতা ও দ্বিতীয় হুগলি সেতুর চাপও অনেকটা কমবে, মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷ নিগমের তরফে বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থার কয়েকশো কর্মী বর্তমানে ওই কাজে যুক্ত।

মগরার অসম রোডের ধারের নার্সারি ব্যবসায়ী তথা বাঁশবেড়িয়ার পুরসদস্য (কাউন্সিলর) অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘এখন এখান থেকে কলকাতা বিমানবন্দর যেতে দু’ঘণ্টা সময় লাগে। সেতু তৈরি হলে ঘণ্টাখানেক সময় কমবে। মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। এলাকার আমূল পরিবর্তন হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge construction work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE