অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকা পারাপার। নিজস্ব চিত্র।
এক মুণ্ডেশ্বরীর জলের ধাক্কায় তিনটি সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত আমতা-২ ব্লকের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা— দুই পঞ্চায়েত এলাকা। বিপাকে পড়লেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। কারণ, জেলার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাঁদের ভরসা ছিল বাঁশের ওই সাঁকোগুলিই।
একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডিভিসির ছাড়া জল— দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে মুণ্ডেশ্বরীতে শুধু জলস্তরই বাড়েনি, প্রবল স্রোতও তৈরি হয়েছে। তার জেরেই শনিবার রাতে টাকিপাড়া, কুলিয়া এবং গায়েনপাড়ায় তিনটি সাঁকো ভেঙে পড়ে। যতদিন না নতুন করে সাঁকো তৈরি হচ্ছে, ততদিন নৌকাতেই পারাপার করতে হবে গ্রামবাসীদের।
মুণ্ডেশ্বরী এবং রূপনারায়ণ দিয়ে ঘেরা ওই দুই পঞ্চায়েত। একটা সময়ে এখানে খেয়া চলত। পরে ঘাট-মালিকেরা বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। পারাপারের জন্য তাঁদের পয়সা দিতে হত গ্রামবাসীদের। রবিবার সাঁকো তিনটি ভেঙে পড়ার পরে বেলা ১০টা নাগাদ ঘাট-মালিকরাই নৌকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু নদীতে প্রবল জলস্রোত থাকায় তিন এলাকাতেই ঘাটের দু’দিকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নৌকা চলাচল করে পুলিশের তত্ত্বাবধানে। যাতে বেশি যাত্রী উঠে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
রবিবার দুপুরে কুলিয়ায় গিয়ে দেখা গেল, নদীর ধারে বহু মানুষ অপেক্ষা করছেন। তাঁরা জানান, এ দিন বাকসিতে সাপ্তাহিক হাট বসে। তাঁরা সেখান থেকে সাপ্তাহিক বাজার করে আনেন। কিন্তু সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ নদী পার হয়ে হাটে যেতে পারেননি। কুলিয়ার বাসিন্দা হারুন রশিদ বলেন, ‘‘নৌকায় একমাত্র জরুরি কাজে যাঁরা যাবেন, তাঁদেরই উঠতে দেওয়া হয়।’’
কুলিয়াতে নদীর পাড়ে একাধিক অনুষ্ঠান-বাড়ি সেখানে এ দিন যাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল, তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। চিৎনানের বাসিন্দা শেখ সালামের ছেলের বৌভাত এবং কন্যার বিয়ে একইসঙ্গে এ দিন ছিল একটি হলে। সালাম বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের জিনিসপত্র কী ভাবে নদী পার করে আনব বুঝতে পারছি না। আমন্ত্রিতরাই বা আসবেন কী ভাবে?’’
দ্বীপাঞ্চলেরই বাসিন্দা তথা আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মানিক দেলওয়ার মিদ্দা বলেন, ‘‘বিয়েবাড়ির জিনিসপত্র এবং আমন্ত্রিতদের আনার জন্য পঞ্চায়েতকে নৌকার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’ একইসঙ্গে নৌকায় করে নদী পারাপার করতে গিয়ে যাতে সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনায় না পড়েন তা দেখার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও মজুত রাখার জন্য ব্লক প্রশাসনকে বলা হয়েছে বলে মানিক জানান।
তবে, ডিভিসি-র ছাড়া জলে রবিবার উদয়নারায়ণপুরে কোনও বিপদ দেখা দেয়নি। ডিভিসি যে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে, তা এ দিন ভোরে দামোদরবাহিত হয়ে এই এলাকায় আসে। তাতে কোনও ক্ষতি হয়নি বলে বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy