হাসপাতালের পুরনো ভবন। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
এক সময় খুঁড়িয়ে চলেছে মানকুণ্ডু মানসিক হাসপাতাল। কর্মীরা দাঁতে দাঁত চেপে পরিষেবা দিয়েছেন। সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। গত কয়েক বছরে বেশ কিছুটা উন্নত হয়েছে পরিষেবা। মাথা তুলছে নতুন ভবনও। সৌজন্যে — ভদ্রেশ্বর পুরসভা।
হাসপাতালটি রয়েছে পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খান রোডে। ২০১১ সালের পরে পুরসভা এই হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। আপাতত পুরনো ভবনেই চিকিৎসা চলছে। নতুন ভবন তৈরির কাজ চলছে।
পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, "অনেকের ধারণা ছিল, হাসপাতাল তুলে আবাসন নির্মাণ হবে। তাঁরা ভুল প্রমাণিত হলেন। মানসিক ভাবে অসুস্থ মানুষ এখান থেকে ভাল হয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য উন্নততর পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন তলা নতুন ভবনে ৬০টি শয্যা থাকবে। চিকিৎসার আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। একতলার কাজ সম্পূর্ণ। সেখানে বহির্বিভাগ থাকবে। দোতলায় মহিলা এবং তিন তলায় পুরুষ রোগীদের রাখা হবে। পুরো কাজ শেষ হলেই পুরনো ভবন থেকে রোগীদের এখানে আনা হবে। হাসপাতাল চত্বরে রোগীদের জন্য পার্ক, বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। রোগীর আত্মীয়দের বসার ব্যবস্থাও থাকবে।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পরিকাঠামো তৈরিতে এক কোটি টাকা খরচ হবে। এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। বাকি টাকারব্যবস্থা আমরা করে ফেলব।’’ তিনি জানান, পুরনো ভবন ভেঙে না ফেলে সংস্কার করে নতুন রূপ দেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শতকের ত্রিশের দশকে কলকাতার বাসিন্দা, চিকিৎসক হরনাথ বসু একটি ব্যবসায়ী পরিবারের মানসিক ভাবে অসুস্থ এক সদস্যকে সুস্থ করে তোলেন। হাসপাতাল তৈরির জন্য তাঁকে উপহার হিসাবে মানকুণ্ডুতে ২২ বিঘে জমি দেয় ওই পরিবার। সেই জমিতেই ১৯৩৯ সালে হরনাথ এই হাসপাতাল তৈরি করেন। অছি পরিষদের পরিচালনায় ’৭৮ সাল পর্যন্ত হাসপাতাল ভালই চলে। পরে আর্থিক অনটনের জন্য অছি পরিষদ হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। ’৮২ সাল থেকে কুড়ি বছর সরকারের তরফে প্রশাসক বসিয়ে হাসপাতাল চালানো হয়। ২০০২ সালে সরকার হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, কর্মচারীরা তা হতে দেননি। তাঁরা কোনও রকমে পরিষেবা টিকিয়ে রাখেন।
হাসপাতালের হিসাবরক্ষক হারাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরনো ভবনের পরিকাঠামো ভেঙে পড়ায় ১৯৮৫ সাল থেকে হাসপাতাল চালানোর অনুমতি ছিল না। এখন অনেকটাই ভাল জায়গায় আছি আমরা।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্তমানে ৬ জন চিকিৎসক, দু’জন মনোবিদ এবং নার্স, আয়া-সহ ৩০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy