যন্ত্র নিয়ে বোঝানো চলছে চাষিদের। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
নাড়া পোড়ানোর মোকাবিলায় কৃষি দফতর বিকল্প পথ দেখাতে পারেনি বলে চাষিদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সম্প্রতি নাড়া পোড়ানোর দূষণ রোধে দু’ধরনের যন্ত্রের প্রদর্শনী শুরু করেছে কৃষি দফতর। একটি যন্ত্র (স্ট্র মালচার) জমিতে পড়ে থাকা নাড়া কুচি করে কেটে দেবে যা জমিতে পচেই জৈব সার হবে। অন্যটি নাড়া বা পড়ে থাকা খড় গুটিয়ে নেবে (স্ট্র বেলার)।
সোমবার গোঘাট ২ ব্লকের ফলুই এবং গোঘাট ১ ব্লকের ভিকদাসের এলাকার মাঠে খড় গুটিয়ে নেওয়া যন্ত্রের প্রদর্শনী হল কৃষি দফতরের তরফে। যদিও তাতে চাষিদের বিশেষ আগ্রহ দেখা গেল না। চাষিদের মত, যে দু’টি যন্ত্রের প্রদর্শনী চলছে, তার মধ্যে কুঁচিয়ে দেওয়ার যন্ত্রটি চাষিদের কাজে লাগবে না। আমন ধান ওঠার পরেই দিন পনেরোর মধ্যে আলু লাগাতে খড় পচে সার হবে না। আবার নাড়া গুটিয়ে যন্ত্রটি কাজের হলেও সেই গুটিয়ে নেওয়া খড় কী ভাবে, কোথায় বিক্রি হবে বা কী ভাবে কাজে লাগানো যাবে সেই দিশা নেই।
এ বারও আমন ধান কাটার পরে গোঘাটের দু্’টি ব্লক-সহ জেলা জুড়ে দেদার নাড়া পোড়ানোর অভিযোগ ছিল। জেলায় কাস্তে দিয়ে ধান কাটার চল প্রায় নেই বললেই চলে। অধিকাংশ চাষি আমন এবং বোরো ধান কাটার পরে জমিতে পড়ে থাকা অবশিষ্ট খড় তথা নাড়া পুড়িয়ে ফেলছেন পরবর্তী চাষের জন্য। এ বারও আমন ধান কাটার পর সেই জমিতে আলু বসাতে দেদার নাড়া পোড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
কেন নাড়া পোড়ানো বন্ধ হয়নি?
গোঘাটের বেলডিহার শামিম খান, আরামবাগের বাতানলের বিমল মালিকের দাবি, পরিবেশ নিয়ে সচেতন হলেও কাস্তে দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলতে বিঘা পিছু প্রায় ৪ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়। বাধ্য হয়ে পোড়াতে হয়। অধিকাংশর গরু নেই, তাই খড় মজুত করার প্রশ্ন নেই। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প না থাকা পর্যন্ত নাড়া পোড়ানো কমা মুশকিল।
আরামবাগের রামনগরের বর্ধিষ্ণু চাষি বিদ্যাপতি বারুইয়ের অভিযোগ, “কৃষি দফতর থেকে বলা হচ্ছিল, খড় পচিয়ে জমিতে সার হিসাবে ব্যবহার করতে। কিন্তু মহকুমার অধিকাংশ জমিই তিন থেকে চার ফসলি। সেই সব জমিতে কম সময়ের মধ্যে খড় কী করে পচে নষ্ট হবে, সেই বিধান নেই।”
তবে এ বার নাড়া পোড়ানো রোধ হবে আশা প্রকাশ করে জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মৃত্যুঞ্জয় মুর্দ্রান্য বলেন, “গুটিয়ে নেওয়া খড় থেকে চাষি মাশরুম চাষ করতে পারবেন। গোখাদ্য হিসাবে বা জ্বালানি হিসাবেও বিক্রি হতে পারে। সেই সব পরিকাঠামো গড়া নিয়েও চিন্তা-ভাবনা চলছে।”
কৃষি দফতর থেকে বলা হয়েছে, চাষিরা যাতে হাতের কাছেই যন্ত্র পান তা নিয়ে সরকারি কেন্দ্রগুলিকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি ৫০-৮০ শতাংশ ভর্তুকিতে ‘ফার্ম মেশিনারি ব্যাঙ্ক’ বা ‘ফার্ম মেশিনারি হাব’ প্রকল্পে চাষিরাও সেই সব যন্ত্র কিনতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy