পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের উত্তর-রাজ্যধরপুর এলাকায় মশার আঁতুরঘর হয়ে রয়েছে। জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে, আতঙ্কিত এলাকাবাসী। —নিজস্ব চিত্র।
জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। এখানকার চাঁপসরা ও উত্তর-রাজ্যধরপুরে অন্তত ২৫ জন জ্বরে ভুগছেন বলে জানা গিয়েছে। তিন জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এক জন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ, জ্বর হলে সবাই যেন চিকিৎসকের কাছে যান। প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাফাইয়ের বালাই নেই। যত্রতত্র জল জমে থাকছে। মশার উপদ্রব বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি ছড়ানোর আশঙ্কাও বাড়ছে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন সম্প্রতি হয়েছে। সাফাইয়ের খামতি মানছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে তাঁরা চিন্তায়। পঞ্চায়েত প্রধান শেখর সাঁপুই বলেন, ‘‘যে তিন জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ও যাঁদের জ্বর হয়েছে, তাঁদের প্রতি নজর রাখতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।’’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সাফাইয়ের অভাবে এলাকার সব পুকুর ঝোপ ও আবর্জনায় ভর্তি। ওই সব জায়গা কার্যত মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে এসে শুধুমাত্র কারও জ্বর হয়েছে কি না, জেনে চলে যান। নিয়মিত মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো পর্যন্ত হয় না।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮টি সংসদের বিস্তীর্ণ এলাকা মিলিয়ে মাত্র ৯-১০ জন আশাকর্মী আছেন। উত্তর রাজ্যধরপুরের এক আশাকর্মীর দাবি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের খবর নেওয়ার পাশাপাশি মশাবাহিত জ্বর ঠেকাতে বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। ডেঙ্গি রুখতে পতঙ্গ মোকাবিলা দল (ভেক্টর কন্ট্রোল টিম বা ভিসিটি) সপ্তাহে এক দিন এলাকা পরিদর্শনে যায়। কোথাও জল জমে থাকলে তা তারা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানায়। মশার লার্ভা মারতে হিসাব অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অন্তর তেল ছেটানো হয়।
সাধারণ মানুষের সচেতনতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ওই এলাকার আশাকর্মী সরস্বতী বাগের অভিযোগ, ভিসিটি কর্মীরা বাড়িতে গেলে, জ্বর হলেও অনেকে জানাতে চান না। অনেক বাড়িতে ডিমের খোলা, মাটির পাত্র প্রভৃতিতে জমা জলে মশার লার্ভা দেখা গিয়েছে। সচেতন করেও লাভ হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘শ্রাবণে মাসভর বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের দু’পাশে তারকেশ্বরের পথে যাওয়া জলযাত্রীদের জল বা অন্য খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানে ব্যবহৃত প্রচুর প্লাস্টিকের জলের গ্লাস রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে। গ্লাসের জমা জলে মশার বংশ বাড়ছে।’’
ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। যত্রতত্র জল জমতে দেওয়া যাবে না। যে সব জায়গায় নিকাশি বদ্ধ হয়ে আছে, সেগুলি দ্রুত সাফাইয়ের ব্যবস্থা করা দরকার।’’ তিনি জানান, কর্মিসংখ্যা কম থাকায় এই এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নির্দিষ্ট সব চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। তবে, ডেঙ্গি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে লাগাতার সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে। তা ছাড়া, ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হয়।
পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। জলসত্র শিবিরে প্লাস্টিকের গ্লাস যাতে ব্যবহার করা না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে যাঁরা জল বিতরণ করবেন, তাঁদের আগাম নোটিস ধরানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy