Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Awas Yojana

আগে পাকা বাড়ি পেয়েও প্রধানের নাম তালিকায়

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ২০১৪-১৫ সালে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে অনুদান পান প্রধান মালতির স্বামী হারু সাঁতরা।

খণ্ডঘোষে প্রধানের বাড়ি।

খণ্ডঘোষে প্রধানের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০:২১
Share: Save:

বাড়ির জন্য এক বার সরকারি অনুদান পেলে, সেই পরিবার বাড়ি তৈরির জন্য আর কোনও প্রকল্পের টাকা পাবে না, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এমনই নিয়ম। কিন্তু খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েতের প্রধান মালতি সাঁতরার পরিবার রাজ্য সরকারের গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অনুদানে বাড়ি করেছেন। কিন্তু এ বার ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পেও তাঁর নাম রয়েছে বলে অভিযোগ। বার বার সমীক্ষার পরেও কী ভাবে উপভোক্তা তালিকায় প্রধানের পরিবারের নাম উঠল, প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এলাকায়। শুধু খণ্ডঘোষ নয়, পাশের আরও একটি পঞ্চায়েতের প্রধানেরও পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও নাম তালিকায় রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।

পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, “কে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, সেটাই দেখা হচ্ছে। যেখানে পাকা বাড়ি পাওয়া গিয়েছে, সে সব নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।”

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ২০১৪-১৫ সালে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে অনুদান পান প্রধান মালতির স্বামী হারু সাঁতরা। তিনিও খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েতে ২০১৮ থেকে পাঁচ বছর প্রধান ছিলেন এবং এখন অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। ‘বাংলার বাড়ি’ তালিকায় ১৪০ নম্বরে মালতি সাঁতরার নাম রয়েছে। ওই দম্পতির দাবি, তাঁদেরএক সময়ে মাটির বাড়ি ছিল। গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৭০ হাজার টাকা পেয়ে মাটির গাঁথনি দিয়ে এক তলা বাড়ি তৈরি করেন। তার পরে আবাস প্রকল্প থেকে নাম বাদ চলে গিয়েছিল। ২০২২ সালের তালিকায় তাঁদের নাম ছিল না। অথচ, এ বার ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের তালিকায় কী ভাবে নাম চলে এল, তাঁরা বুঝতে পারছেন না বলে দাবি করেন।

প্রধানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় তিন কাঠা জায়গায় পাঁচিল দিয়ে ঘেরা বাড়ির চত্বর। এক তলা গ্রিল দিয়ে ঘেরা বাড়িতে দম্পতি থাকেন। একটি মন্দির রয়েছে। প্রধান বলেন, “তালিকায় নাম দেখে আমরাও অবাক হয়েছি। সমীক্ষা করতে এসেছিল। আমার আর কিছু বলার নেই।” তাঁর স্বামীর দাবি, “আমার তো পাকা বাড়ি। কী ভাবে নাম এল, বুঝতে পারছি না। দেখার পরেই বিডিও-কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি, গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছিলাম। আমরা আবেদন করিনি, অথচ তালিকায় নাম রয়েছে!”

বিরোধীদের দাবি, শুধু ওই দম্পতি নন, পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও পাশের একটি পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যের স্ত্রী, তৃণমূলের নেতার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নাম তালিকায় রয়েছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষের অভিযোগ, “তৃণমূল এবং প্রশাসন এক হয়েই এ ধরনের তালিকা তৈরি করেছে। যেখানে তৃণমূলের নেতাদের নাম রয়েছে, অথচ যোগ্যদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।” বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, “এখন তো আবাস তালিকায় দুর্নীতির চূড়া দেখা যাচ্ছে। মূল তালিকা বেরোলে স্বজনপোষণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই দেখার।”

তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস অবশ্য বলেন, “প্রধান তো নিজেই নাম বাদ দিয়েছেন। তাহলে এত প্রশ্ন ওঠার কারণ কী!”

অন্য বিষয়গুলি:

Khandaghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy