Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Arun Chakraborty Death

প্রয়াত ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’র কবি

শনিবার সকালে মরদেহ আনা হয় চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে। সেখানে হুগলি-চুঁচুড়া বইমেলা কমিটির উদ্যোগে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান হয়।

কবির শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে।

কবির শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০৩
Share: Save:

প্রয়াত হলেন কবি অরুণ চক্রবর্তী। বছরের পর বছর ধরে যে মানুষটিকে ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’র স্রষ্টা হিসাবেই এক ডাকে চিনে এসেছে গোটা বাংলা। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

বাড়ির লোকেরা জানান, শুক্রবার কলকাতার মোহরকুঞ্জে ‘জঙ্গলমহল উৎসব’-এ গিয়েছিলেন অরুণ। সেখানে একটু ঠান্ডা লাগে। আমল দেননি। চুঁচুড়া স্টেশনের কাছে ফার্ম সাইড রোডে বাড়িতে ফিরে দুই নাতির সঙ্গে হাসি-মজা করেই সময় কাটান। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ শৌচাগারে ঢুকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে যান। চিকিৎসক এসে জানিয়ে দেন, প্রয়াত হয়েছেন কবি।

শনিবার সকালে মরদেহ আনা হয় চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে। সেখানে হুগলি-চুঁচুড়া বইমেলা কমিটির উদ্যোগে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান হয়। জেলা ও জেলার বাইরের সংস্কৃতি জগতের লোকজন থেকে বহু সাধারণ মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিনিধি থেকে চন্দননগরের মেয়ে, এভারেস্টজয়ী পিয়ালি বসাক শ্রদ্ধা জানান। মরদেহে মালা দেন তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি, নকশালপন্থী রাজনীতিকরাও। রিষড়ার অঙ্কুরের জগদ্ধাত্রী বিজয়া সম্মিলনীতে শনিবার সন্ধ্যায় সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়। সেখানে পর্দাজুড়ে কবি অরুণ চক্রবর্তীর ছবি দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

পিয়ালি জানান, ছ’বছর বয়সে অরুণের ভাই অপূর্বের হাত ধরে তিনি পাহাড় চিনেছেন। সেই সূত্রে বহু বার তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন অরুণও।

ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন অরুণ। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে হিন্দমোটর কারখানায় চাকরি পান। সঙ্গে চলত লেখালেখি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কলমের সঙ্গে তাঁর সখ্য বজায় থেকেছে। পাঁচ দশক আগে শ্রীরামপুর স্টেশনে থাকা একটি মহুয়া গাছ দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, ওই জায়গায় গাছটি বেমানান। এর পরেই তাঁর কলম থেকে বেরিয়ে আসে, ‘হিতাক তুকে মানাইছে নাই রে, এক্কেবারে মানাইছে নাই রে...’। এই কবিতাই পরবর্তীকালে লোকগীতি হিসেবে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বহু ভাষায় তা অনুদিত হয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছয়। শুধু এই গান বা কবিতা নয়, তাঁর লেখা বহু বই বিদেশের মাটিতেও সমাদৃত। নব্বইয়ের দশকে তিনি জাতীয় পুরস্কার পান।

হুগলি-চুঁচুড়া বইমেলা কমিটির সদস্য গোপাল চাকির কথায়, ‘‘সাধারণের মধ্যেও অসাধারণ মানুষ ছিলেন অরুণ চক্রবর্তী। কলকাতায় থাকার সব রকম সুযোগ-সুবিধা পেয়েও মফস্‌সলে কাটিয়ে দিলেন। মানুষে ছোটবড় ভেদ করতেন না।’’ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাঁশবেড়িয়ার উপ-পুরপ্রধান শিল্পী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একদিন একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ নিয়ে জেঠুর বাড়ি গিয়েছিলাম। তখন উনি ঘরে নেই। জেঠিমাকে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, রাস্তার দিকে কোনও রিকশাচালককে জিজ্ঞাসা করো, ঠিকানা বলে দেবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy