ধসের জেরে ফাটল পাইপলাইনে, ২২টি ওয়ার্ড নির্জলা হাওড়ায়

হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধস নেমে বিপর্যয় ঘটল বৃহস্পতিবার সকালে। এর জেরে প্রায় দেড় বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভেঙে পড়েছে একটি বড় পাঁচিল। পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের ১৫০০ মিলিমিটার ব্যাসের মূল পাইপলাইন ফেটে দিনভর নির্জলা হয়ে পড়েছে উত্তর হাওড়া ও শিবপুর বিধানসভার একাংশ। ফের ধস নামার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এফ রোডের বাসিন্দারা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পুরসভা ও কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা কাজ শুরু করলেও পাইপলাইন মেরামত করে কখন জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ।

পুরসভা সূত্রের খবর, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের মূল পাইপলাইনটি গিয়েছে বেলগাছিয়া মোড় থেকে এফ রোড হয়ে, বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পাশ দিয়ে। আবার সেটির পাশ দিয়েই গিয়েছে উত্তর হাওড়ার মূল নিকাশি নালা। আর তাতেই হয়েছে বিপত্তি। ওই ভাগাড়ে শহরের সমস্ত আবর্জনা জমে কার্যত পাহাড়ের আকার নিয়েছে। যেখান থেকে প্রায়ই ধস নেমে এলাকার মূল নিকাশি নালা অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া, জমা আবর্জনা থেকে মিথেন গ্যাস বেরিয়ে আগুন লেগে যায় প্রায়ই। ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন সকালে মাটির তলায় ধসের জেরে জলের পাইপলাইন ফেটে গোটা এলাকা ভেসে যায়। জল ঢুকে পড়ে ঘরেও। স্থানীয় এক বাসিন্দা রঞ্জন মালি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে পুরো এলাকাই ধসে যাবে। পাইপ ফেটে আমাদের ঘরেও জল ঢুকে গিয়েছে।’’

এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ খবর পেয়ে যান পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বাপি মান্না-সহ পুরসভার পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারেরা। খবর দেওয়া হয় কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের। প্রথমেই পাইপলাইনে জলের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘খুব বড় বিপর্যয় হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ইঞ্জিনিয়ারেরা মনে করছেন, ভূমিস্তরে জৈব গ্যাসের জেরে ক্ষয় ধরায় এই ধস। দেড় বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তায় ফাটল হয়েছে। ১৫০০ মিলিমিটার ব্যাসের লোহার পাইপ ফেটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জল সরবরাহ। ২২টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ বন্ধ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কেএমডিএ কাজ করেছে। আশা করা যায়, শুক্রবার রাতের মধ্যে লাইন মেরামত করে জল সরবরাহ করা যাবে।’’ তিনি জানান, নির্জলা ওয়ার্ডে পুরসভা ট্যাঙ্কারে জল সরবরাহ শুরু করেছে। এর জন্য কলকাতা পুরসভা থেকেও ট্যাঙ্কার আনা হয়েছে। প্রয়োজনে কলকাতা পুরসভা আরও ট্যাঙ্কার পাঠাবে।

এ দিকে, পাইপ ফেটে রাস্তা বন্ধ হওয়ায় এ দিন এফ রোড দিয়ে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণের গাড়ি যেতে না পারায় ঘুরে ঝিল রোড দিয়ে যেতে হচ্ছে। ফলে সময় মতো
জঞ্জাল অপসারণেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুর চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, পাইপলাইন ও রাস্তা মেরামতি না হওয়া পর্যন্ত ঝিল রোড দিয়েই জঞ্জালের গাড়িকে ভাগাড়ে ঢুকতে হবে।