Advertisement
E-Paper

ভোট দিলে রাস্তা-নর্দমা, মন্তব্য বিধায়ক-সঙ্গীদের

উন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর। বৃহস্পতিবার সেই বুথে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের সঙ্গে জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়ে কিছু দলীয় কর্মী উন্নয়নের প্রশ্নে কার্যত হুমকির সুরে ভোট চাইলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জনসংযোগ কর্মসূচিতে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার।

জনসংযোগ কর্মসূচিতে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৩
Share
Save

গত দু’টি (২০১৮ ও ২০২৩)পঞ্চায়েত নির্বাচনে চুঁচুড়ার কোদালিয়া ১ পঞ্চায়েতের সিংহীবাগান এলাকার ১৪৯ নম্বর বুথে জয়ী হয় বিজেপি। গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনেও ওই বুথে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। উন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর। বৃহস্পতিবার সেই বুথে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের সঙ্গে জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়ে কিছু দলীয় কর্মী উন্নয়নের প্রশ্নে কার্যত হুমকির সুরে ভোট চাইলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দলীয় কর্মীদের এ হেন আচরণের নিন্দা করেছেন বিধায়ক।

দীর্ঘদিন পরে বিধায়ককে হাতের কাছে পেয়ে উন্নয়ন সংক্রান্ত নালিশ জানাচ্ছিলেন মৌসুমী মজুমদার নামে এক মহিলা। কিন্তু বিধায়ক একটু এগিয়ে যেতেই পিছনে থাকা তৃণমূল কর্মীদের মন্তব্য, ‘‘কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয়। আমাদের ভোট দিন। রাস্তা, নর্দমা সব হবে।’’

ওই মন্তব্যে হতভম্ভ মৌসুমী বলেন, ‘‘আগে তৃণমূলকে ভোট দিতাম। কিন্তু ভোটের পরে কেউ খোঁজ নিত না। তাই বিজেপিকে দিয়েছি। কিন্তু ভোট না দিলে সরকারি উন্নয়নের ভাগীদার হতে পারব না, প্রথম শুনলাম!’’ দলীয় কর্মীদের ওই মন্তব্য পরে কানে যায় বিধায়কের। তিনি বলেন, ‘‘ওরা ঠিক করেনি। ভোট না দিলে কাজ হবে না, এটা হতে পারে না! কারা বলল, আমি দেখছি।’’

বিধায়কও এ দিন উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে ভোট চেয়েছেন। তবে, মজার ছলে। পরিচিত এক যুবকের কাছে রাস্তা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি জানতে চান, ‘‘জেতাবি তো?’’ এ নিয়ে প্রশ্নে অসিত রাখঢাক না করেই বলেন, "ভোট না পাওয়ার কারণ খুঁজতে বেরিয়েছি। এসে কারণ জানতেও পেরেছি। তাই আমি মুখ চেনা কিছু মানুষকে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছি। এতে অপরাধের কী আছে!’’

লোকসভা ভোটে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়ে বুধবার থেকে জনসংযোগে নেমেছেন অসিত। প্রথম দিনে এই পঞ্চায়েতের দেবীপুরে জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় দিনেও বহু মানুষ বিধায়ককে হাতের কাছে পেয়ে পঞ্চায়েতের নানা পরিষেবা না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ জানান। বিধায়ক কোথাও রাস্তা ও নালা তৈরির আশ্বাস দেন। কোথাও সরকারি বাড়ি, বার্ধক্য ভাতা কিংবা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ নাম নথিভুক্ত করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বেশ কয়েক জায়গায় অভিযোগ শুনে বিধায়ক সঙ্গে থাকা পঞ্চায়েত সদস্যদের সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলতেই জনতা একযোগে বলেছে, ‘‘না, দাদা (বিধায়ক) আপনি দায়িত্ব নিন, না হলে কোনও দিনও হবে না।’’

বিধায়কের হাত ধরে এ দিন স্থানীয় বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের অমলকুমার মিত্রের আকুতি, ‘‘পঞ্চায়েতের সকলকে বলা হয়েছে, কিন্তু হয়নি। একবার আপনি বলুন। নিকাশি ও রাস্তা হবে।’’ তিন মাসের মধ্যে অমলের চাওয়া পূরণ হবে বলে জানিয়ে দেন অসিত।

সাধারণ মানুষের কি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের উপরে ভরসা নেই? অসিতের জবাব, ‘‘ভুল তো কিছু করেইছে। না হলে ভোট পাইনি কেন! এরপরে না শুধরালে ব্যবস্থা নেব।’’ পঞ্চায়েত প্রধান সুকান্তকুমার ঘোষ মানছেন, গ্রামোন্নয়নের প্রশ্নে কিছু খামতি রয়েছে। তবে, তিনি বলেন, ‘‘অনেকটা এলাকা নিয়ে এই পঞ্চায়েত। তাই কিছু কাজ বাকি আছে। দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC BJP Vote

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}