লিমোজ়িন বিস্ফোরণকাণ্ডের নেপথ্যে কাদের হাত রয়েছে, এই প্রশ্নে একাধিক বিকল্পের কথা বলেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের দাবি, এই পদ্ধতিতে পুতিনকে হত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারে ইউক্রেনীয় গুপ্তচর সংস্থা। ২০২২ সালের অগস্টে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান রুশ প্রেসিডেন্টের ‘মস্তিষ্ক’ হিসাবে পরিচিত আলেকজ়ান্ডার ডুগিনের কন্যা দারিয়া।
রাজধানী মস্কো থেকে ৩২ কিমি দূরে মোজাইস্কয় মোটরওয়েতে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজ়ার চালিয়ে নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন ডুগিন-কন্যা। আচমকাই চলন্ত গাড়িতে বিস্ফোরণ হলে তাঁর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। দারিয়ার মৃত্যুর মাত্র ছ’মাস আগে (পড়ুন ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে বিশেষ সেনা অভিযান (স্পেশ্যাল মিলিটারি অপারেশন) শুরু করেন পুতিন, তিন বছর পেরিয়ে যা এখনও বন্ধ হয়নি।
ডুগিন-কন্যার মৃত্যুর তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পান রুশ গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, দারিয়ার ল্যান্ড ক্রুজ়ারের ইঞ্জিনে একটি বিশেষ যন্ত্র বসানো হয়েছিল। এর সাহায্যে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসে বিস্ফোরণ ঘটায় আততায়ী। এই হত্যাকাণ্ডে ইউক্রেনীয় গুপ্তচরদের পাশাপাশি কিভের ‘সন্ত্রাসী’দের যোগাযোগ থাকার প্রমাণ পায় মস্কো।
বিশেষজ্ঞেরা লিমোজ়িন বিস্ফোরণের নেপথ্যে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি’ বা সিআইএ-র হাত থাকার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এ ছাড়া পুতিন অন্তর্ঘাতের শিকার হতে পারেন বলেও মনে করেন বিশ্লেষকদের একাংশ। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, গোটাটাই নিজের হাতে সাজিয়েছেন পুতিন। এই অজুহাতকে কাজে লাগিয়ে এ বার পুরো ইউক্রেন দখলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন তিনি।
পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে অন্তত ছ’বার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু প্রতি বারই আশ্চর্যজনক ভাবে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সর্বশেষ চেষ্টাটি হয় ২০২৩ সালের মে মাসে। ওই দিন ক্রেমলিনের প্রাসাদ লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেনীয় সেনা। মানববিহীন উড়ুক্কু যানগুলিকে অবশ্য দেখামাত্রই গুলি করে নামায় রুশ ফৌজ।
‘দ্য সানডে টাইমস’ লিখেছে, ২০০৩ সালের অক্টোবরে পুতিনকে খুনের চক্রান্ত ব্যর্থ করে ব্রিটিশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা। ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গরাদের ওপারে পাঠায় তারা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, রুশ প্রেসিডেন্টকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে মরিয়া ছিলেন মস্কোর গুপ্তচর সংস্থা ‘ফেডারেল সিকিয়োরিটি সার্ভিস’-এর (এফএসবি) এক সাবেক হিটম্যানও।
এ ছাড়া এক বার ক্রেমলিনের কাছে মোটরওয়েতে বিস্ফোরণে পুতিনের গাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে আততায়ীরা। কিন্তু, রুশ গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে পারেনি তারা। ওই রাস্তা থেকে ৪০ কেজি বিস্ফোরণ উদ্ধার করে মস্কো পুলিশ। হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্রে কাদের হাত ছিল, তা অবশ্য সে বার জানতে পারেননি রাশিয়ার দুঁদে গোয়েন্দারা।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা ‘দ্য সান’ জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট লিমোজ়িনটি পুতিনের কনভয়ে ব্যবহার হয়। গাড়িটির বাজারমূল্য ২ লক্ষ ৭৫ হাজার পাউন্ড। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের সম্পত্তি বিভাগের (প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট) কাঁধে। বছর ৭২-এর পুতিনের সংগ্রহে এই ধরনের একাধিক লিমোজ়িন রয়েছে। প্রায়ই সেগুলিতে তাঁকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy