প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ফিরছে পড়ুয়ারা।
এমনটাই দেখা যাচ্ছে হাওড়া জেলা জুড়ে। একসময়ে এই জেলার সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছিল। শিক্ষকেরা অভিভাবকদের দরজায় দরজায় ঘুরতেন ছাত্র ভর্তির আবেদন নিয়ে। অভিভাবকেরা সে ভাবে ঘুরেও তাকাতেন না। ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে দিতেন বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। এ বার যেন উলট পুরাণ!
এমনিতে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি চলে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই জেলার স্কুলগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও জারি রয়েছে। যে এলাকায় বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা যত বেশি, সেখানে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির হারও তত বেশি।
বাগনানের একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জহুরা খাতুন বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে এমনিতেই পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। তার উপরে বিভিন্ন শ্রেণিতে ইতিমধ্যেই শতাধিক ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। সবাই বেসরকারি স্কুল থেকে এসেছে।’’ আমতা-১ ব্লকের উদং উত্তরপাড়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিতু সাহা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা ৭২ জন। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০-তে। ভর্তি এখনও চলছে। সবাই বেসরকারি স্কুল থেকে এসেছে।’’ এমন ছবি আরও আছে।
কেন এই প্রবণতা?
অভিভাবকদের একাংশ জানিয়েছেন, লকডাউন পর্বে তাঁদের পরিবারের আয় অনেক কমে গিয়েছে। ফলে, ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর খরচ তাঁরা আর চালাতে পারছিলেন না। স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইনে পড়ানো হয়েছে। সে জন্য ‘ফি’-ও দিতে হয়েছে। কিন্তু আর্থিক অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ায় আর তাঁদের সেই ক্ষমতা নেই। সে কারণেই তাঁরা ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন।
অভিভাবকদের আর একটি অংশ জানিয়েছেন, সরকারি প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল দেওয়া হয়। বিনামূল্যে বই দেওয়া হয়। খারাপ আর্থিক অবস্থায় তাঁরা ছেলেমেয়েদের তাই সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোই শ্রেয় মনে করছেন।
অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়া যে বেসরকারি স্কুল থেকে ছেলেমেয়েদের ছাড়িয়ে নেওয়ার অন্যতম কারণ তা স্বীকার করেছেন বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষেরা। বাগনানের একটি বেসরকারি স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘অন্যান্য বছর যে ভাবে ছাত্র ভর্তি হয়, এ বারে সেই হার অনেকটাই কম। তবে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও চলছে। দেখা যাক কী হয়। আমরা অনেক ছাত্রছাত্রীর ফি মকুব করেছি।’’ উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের কর্ণধার অরুণ করও বলেন, ‘‘গত বারের চেয়ে অন্তত ২০ শতাংশ কম পড়ুয়া এ বারে ভর্তি হয়েছে। স্কুল কী ভাবে চালাব বুঝতে পারছি না। খরচ প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। অথচ, ছাত্র ভর্তি না-হওয়ায় আয় কমে গিয়েছে।’’
করোনার জেরে বিপােক বেসরকারি স্কুল। সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে ‘পৌষ মাস’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy