Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Protest

মিল খোলার দাবি, পাঁচ জায়গায় অবরোধ হুগলিতে

পাঁচ জায়গায় রাস্তা অবরোধে সিআউটিইউ, এআইটিইউসি, এআইইউটিইউসি, আইএনটিইউসি, টিইউসিসি প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠন রাস্তায় নামল।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২২ ০৮:১৬
Share: Save:

গত পয়লা জানুয়ারি তালা ঝুলেছে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া এবং শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলে। এখনও খোলার নাম নেই। রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলে শেষ কাজ হয়েছে দীর্ঘদিন আগে। ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুটমিলও বন্ধ। ওই চার মিল বেশ কয়েক হাজার শ্রমিকের রুজিরুটির ঠিকানা। মিল বন্ধে তাঁদের সংসারে হাঁড়ির হাল। কেউ ছুটছেন অন্য জুটমিলে বদলি শ্রমিক হিসেবে কাজের আশায়, কারও হাত রিকশার হ্যান্ডেলে। কেউ চালাচ্ছেন টোটো। ভেঙে পড়েছে শ্রমিক মহল্লা লাগোয়া এলাকার অর্থনীতি। হাহুতাশ সর্বত্র।

এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বন্ধ মিল খোলা এবং চালু মিলে শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধে ও সকলের কাজের দাবিতে শুক্রবার হুগলির পাঁচ জায়গায় রাস্তা অবরোধ হল। সিআউটিইউ, এআইটিইউসি, এআইইউটিইউসি, আইএনটিইউসি, টিইউসিসি প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠন রাস্তায় নামল।

সকাল ১০টা নাগাদ ওয়েলিংটনের সামনে জিটি রোড অবরোধ হয়। এআইটিইউসি অনুমোদিত ফেডেরাল চটকল মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস দত্ত, সিআইটিইউ-র জেলা সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায়, রিষড়ার কংগ্রেস কাউন্সিলর ব্রহ্মদেও রবিদাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রমিকরা অভিযোগ তোলেন, মিল থেকে যন্ত্রপাতি চুরি হচ্ছে। অথচ, পুলিশ নিষ্ক্রিয়। মিল পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে, শ্রমিকের ভাত মেরে সেখানে বহুতল তৈরির চক্রান্ত চলছে। ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে।

শ্রীরামপুরের বটতলাতেও জিটি রোড অবরোধ হয়। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে তিন বছর বন্ধ ছিল এই শহরের ইন্ডিয়া জুটমিল। বিস্তর টালবাহানার পরে মিল চালু হলেও সাড়ে পাঁচ মাসের বেশি চলেনি। মিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শ্রমিকরা প্রশ্ন তুলছেন।

গোন্দলপাড়া জুটমিলও দীর্ঘদিন বন্ধের পরে ১ বছরের জন্য খুলেছিল। ফের পাঁচ মাস হয়ে গেল, মিল বন্ধ। এখানকার জ্যোতির মোড়ে জিটি রোড অবরোধ হয়। চাঁপদানির পলতাঘাটে জিটি রোড অবরোধ হয় নর্থ শ্যামনগর জুটমিল খোলার দাবিতে। অবরোধের জেরে ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির লাইন পড়ে যায়। অবরোধ তুলতে সর্বত্রই ছিল চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। বাঁশবেড়িয়াতেও শ্রমিকরা অবরোধ করেন ন্যায্য পাওনার দাবিতে।

কাজ হারানো শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ একতরফা ভাবে মিল বন্ধ রেখেছেন। তাঁদের সংসার চলছে না। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার জোগাড়। বটতলায় অবরোধকারী এক শ্রমিক বলেন, ‘‘দামের ঊর্ধ্বসীমার জন্য পাট কেনায় নাকি সমস্যা হচ্ছিল! এখন তো শুনছি, ঊর্ধ্বসীমা উঠে গিয়েছে। এখনও কেন মিল খুলছে না?’’ ওয়েলিংটনের শ্রমিক অভয় দাস বলেন, ‘‘বাড়িতে পাঁচ জন লোক। সংসার চালাতে বদলি শ্রমিকের কাজ পেতে অন্য মিলে হত্যে দিই। কোনও মাসে ১০-১২ দিন কাজ জোটে। কোনও মাসে তা-ও নয়। কাজ হলে দৈনিক ৩০০ টাকা পাই। এতে সংসার চলে?’’ সনৎ সামন্ত নামে এক শ্রমিক অন্যের টোটো ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন।

অবরোধের জেরে এ দিনই গোন্দলপাড়া জুটমিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন চন্দননগরের মহকুমাশাসক অয়ন দত্তগুপ্ত। ঠিক হয়েছে, সমস্যা সমাধানে আগামী মাসের গোড়ায় বৈঠক হবে। ইন্ডিয়া জুটমিল নিয়েও আগামী ৬ জুন বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। বন্ধ মিলের শ্রমিক হিসেবে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থার কথাও শোনা যাচ্ছে শ্রম দফতর সূত্রে।

অন্য বিষয়গুলি:

Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy