Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jutemill Workers

কাজ কমেছে জুটমিলে, পুজোর মুখে চিন্তায় শ্রমিক

হুগলিতে জুটমিল ১০টি। রিষড়ার ওয়েলিংটন বাদে অন্য জুটমিলগুলি চালু আছে। গোন্দলপাড়া দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে সম্প্রতি খুলেছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৫
Share: Save:

কাজ হত দৈনিক তিনটি পর্যায়ে (শিফট), সপ্তাহে সাত দিনই। কিন্তু হুগলির জুটমিলগুলিতে বর্তমানে সাতের বদলে সপ্তাহে ছ’দিন কাজ হচ্ছে। কোথাও আবার মাঝে মধ্যে শিফটের সংখ্যাও কমিয়ে আনা হচ্ছে। এই অবস্থায় পুজোর মুখে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন শ্রমিকেরা। পরিস্থিতির জন্য মিল-কর্তৃপক্ষের দিকেই শ্রমিকদের আঙুল উঠছে। মিল কর্তারা অবশ্য দুষছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাঁদের অভিযোগ, যে পরিমাণ চটের বস্তার বরাত দেওয়ার প্রস্তাব প্রাথমিক ভাবে দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে, বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে তার থেকে অনেক কম। ফলে উৎপাদন কমিয়ে আনতে হয়েছে।

হুগলিতে জুটমিল ১০টি। রিষড়ার ওয়েলিংটন বাদে অন্য জুটমিলগুলি চালু আছে। গোন্দলপাড়া দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে সম্প্রতি খুলেছে। বাঁশবেড়িয়ার গ্যাঞ্জেস, চন্দননগরের গোন্দলপাড়া, ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া, নর্থ শ্যামনগর, চাঁপদানির ডালহৌসি, অ্যাঙ্গাস, নর্থব্রুক, শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া, রিষড়ার হেস্টিংস জুটমিলে ৬ দিন করে চালু আছে। হুগলির একটি জুটমিলের এক কর্তা জানান, প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, প্রতি মাসে ৪ লক্ষ বেল (প্রতি বেলে ৫০০ বস্তা) চটের বস্তা নেওয়া হবে পশ্চিমবঙ্গের জুটমিলগুলি থেকে। সরকারি ক্ষেত্রে চাল ও গমে বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা ব্যবহার করা হবে। সেই আশ্বাসে ভর করেই মিলগুলি উৎপাদন চালিয়ে আসছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বাস্তবে ঘটছে ঠিক উল্টো। প্রতি মাসে আমাদের রাজ্য থেকে আড়াই লক্ষ বেলের বেশি বস্তা নেওয়া হচ্ছে না। সে কারণেই মিলগুলি বিপাকে পড়েছে। আমাদের আশঙ্কা, সরকারি ক্ষেত্রেও হয় তো পুরনো চটের বস্তাতেই কাজ চালানো হচ্ছে।’’

এই পরিস্থিতিই দুশ্চিন্তায় ফেলেছে শ্রমিককে। ভিক্টোরিয়া জুটমিলের এক শ্রমিক বলেন, ‘‘দেড় দশক জুটমিলে কাজ করছি। প্রতি বার পুজো এলেই মিল কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত খাড়া করেন। আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করি না। কারণ, মিল বন্ধ হলে সংসার চালাব কী করে? পুজোর মুখে মিলের মালিকেরা যখন কম বরাতের কথা বলছেন, তখন পুজোর বোনাস বা অন্য কোনও আর্থিক সুবিধা আদৌ পাব কি না, সন্দেহ।’’

এ বিষয়ে সিটুর জেলা সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায় জানান, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাজ্যের জুটমিল মালিক, সরকারি প্রতিনিধি এবং ২১টি শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে হয়। তীর্থঙ্করের কথায়, ‘‘পুজো এলেই শ্রমিকদের পাওনার কথা উঠলেই মিল মালিকদের নানা বাহানা তৈরি হয়। কখনও বলেন, বাজার নেই। কখনও বরাতের প্রশ্ন তোলেন। আমরা অবিলম্বে জুটমিল শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবি করেছি। কাজের সময় কমানো যাবে না। কম পয়সায় বদলি শ্রমিক নয়, স্থায়ী শ্রমিকদের দিয়েই কাজ করাতে হবে।’’

একই সুরে গ্যাঞ্জেস জুটমিলের আইএনটিটিইউসি সম্পাদক সঞ্জিত মজুমদার বলেন, ‘‘শ্রমিকদের কাজের সময় কমানো যাবে না। সম কাজে সমবেতন চালু করতে হবে। এখন ফড়েরাই মিল চালাচ্ছে। অস্থায়ী শ্রমিকদের ২০০ টাকা রোজে কাজ করানো হচ্ছে। বেশিরভাগ মিলেই স্থায়ী শ্রমিক কমিয়ে আনা হচ্ছে যাতে পিএফ, গ্র্যাচুইটি, ইএসআই দিতে
না হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah India Jutemill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy