রুপোর মেডেল হাতে মেহুলি (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার সকাল থেকে টিভির সামনে থেকে নড়েননি বৈদ্যবাটীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়ার বাসিন্দারা। কারণ, টিভিতে তখন পাড়ার মেয়ে এশিয়ান গেমসে শুটিং-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন। মান রেখেছেন তিনি। জিতেছেন রুপোর পদক। তাঁকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই এলাকাবাসীর। তাই তাঁরা ঠিকই করে ফেলেছেন, পাড়ার পুজোর উদ্বোধন করবেন মেহুলি-ই।
চিনে আয়োজিত এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রথম পদক এল শুটিং থেকে। মহিলাদের দলগত ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রুপো জিতলেন ভারতীয়েরা। দলে বাংলার মেহুলি ছাড়াও ছিলেন রমিতা জিন্দল এবং আশি চৌকশে। এ দিন টিভির সামনে থেকে নড়েননি মেহুলির মা মিতালি, বাবা নিমাই ও দিদা মঞ্জু দেবী।
মেহুলির দিদা বলেন, ‘‘ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে বেলুন ফাটাত মেহুলি। আমার কাছে আবদার করেছিল রাইফেল কিনে দেওয়ার। প্রথমে একটা পুরনো এয়ার রাইফেল কিনে দিই। ওর বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখেই ওকে শুটিং-এ ভর্তি করানো হয়।’’
২০১৩ মেহুলির এয়ার রাইফেলে হাতেখড়ি। ২০১৪ থেকে রাজ্যস্তরে স্কুল চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দেন। মাত্র তিন বছরের মধ্যে রাজ্য স্কুল প্রি-ন্যাশনালে একাধিক সাফল্যের পর ২০১৭-এ ন্যাশনালে নটি পদক মেহুলিকে ভাল শুটিংয়ের জন্য প্রেরণা জুগিয়েছিল। সেই সময় অলিম্পিয়ান শুটার জয়দীপ কর্মকারের অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করতেন মেহুলি। ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সুযোগ পায়। টোকিওতে অনুষ্ঠিত দশম এশিয়ান এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন মেহুলি। সেখানে চিনের তিন শুটারকে হারিয়ে সোনা জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মেহুলি। সেই সঙ্গে যুব অলিম্পিকে যোগ দেওয়ার ছাড়পত্র পান। বর্তমানে হায়দরাবাদের গগন নারাং অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করেন তিনি। ২০২১ থেকে সেখানেই থাকেন। প্রতিদিন প্রায় আট ঘণ্টা অনুশীলন করেন। তাঁর বর্তমান কোচ বিবস্বান গঙ্গোপাধ্যায়।
মেহুলি মা মিতালির কথায় ‘‘এর আগে কমনওয়েলথে ও যুব অলিম্পিকেও রুপো পেয়েছিল মেয়েটা। খেলার আগে মেয়ের মনোঃসংযোগ যাতে নষ্ট না হয়, সেই কারণে আমরা কথা বলি না। এখন মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য
মুখিয়ে আছি।’’
মেহুলির বাবা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা খরচসাপেক্ষ খেলা। সামর্থের বাইরে গিয়েই ওকে শেখাচ্ছি। মেয়েটা ভালই ফল করছে। তবে কতদিন টানতে পারব, জানি না।’’
মেহুলির এমন ফলের পর তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভাবছে তাঁর পাড়া। কামারপাড়ার এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘এত বড় প্রতিযোগিতায় এমন ফল করেছে পাড়ার সেই ছোট্ট মেয়েটা। দেশকে গর্বিত করেছে আমাদের পাড়ার মেয়ে, এটা আমাদেরও গর্বের বিষয় বটে!’’
আর এক পড়শি বলেন, ‘‘পাড়ার পুজো এ বার ২৫ বছরে পড়েছে। তার উদ্বোধন করবে মেহুলি-ই। ওই তো আমাদের তারকা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy