Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2022

বুর্জ খলিফা থেকে কামাক্ষ্যা, ভিড় কি এ বার জিরাটেও!

উদ্যোক্তাদের দাবি, সাদামাটা আয়োজন সরিয়ে বছর পনেরো ধরে বড় পুজোয় ঝুঁকেছে জিরাট। টাকা জোগান পুজো কমিটির সদস্য এবং এলাকাবাসীই। কিছু পুজো কমিটি লটারি প্রতিযোগিতাও করে।

 জিরাটের সবুজ সঙ্ঘের মণ্ডপ। ছবি: সুশান্ত সরকার

জিরাটের সবুজ সঙ্ঘের মণ্ডপ। ছবি: সুশান্ত সরকার

প্রকাশ পাল
জিরাট  শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৬
Share: Save:

দুরর্গাপুজোয় ভিড় ভেঙে পড়ে শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া, উত্তরপাড়ার মতো শহরে। হুগলির প্রান্তিক ব্লক বলাগড়ের জিরাটকে গঞ্জ বলা যেতে পারে। তবে, শারদোৎসবে কার্যত পাঁচটা শহুরে এলাকার সঙ্গে টক্কর দিতে চলেছে গঙ্গাপাড়ের এই জনপদ। রেললাইনের দু’পাশে মেরেকেটেদেড়-দু’কিলোমিটার চৌহদ্দিতে ৬টি পুজোর বাজেটই কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গড়ে উঠেছে চোখজুড়নো বিশালাকার মণ্ডপ।

এ তল্লাটের পুজোয় স্পনসরের চোখ বিশেষ পড়ে না। এত টাকাদিচ্ছে কে?

উদ্যোক্তাদের দাবি, সাদামাটা আয়োজন সরিয়ে বছর পনেরো ধরে বড় পুজোয় ঝুঁকেছে জিরাট। টাকা জোগান পুজো কমিটির সদস্য এবং এলাকাবাসীই। কিছু পুজো কমিটি লটারি প্রতিযোগিতাও করে। গড়পড়তা ৭-৮ লক্ষের মধ্যে বাজেট থাকে বিভিন্ন পুজোর। ভিড়ও হয় প্রচুর। কোনও পুজোর জয়ন্তী থাকলে, তারা হাত খুলে খরচ করে। তখন, আশপাশের পুজোও উঠেপড়ে নামে। এ বার কারও বিশেষ জয়ন্তী নেই। তবে, করোনার দু’বছর নিরানন্দে কাটার পরে, এ বার বিধিনিষেধ না থাকায় বড় পুজো করতে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

৭২ তম বর্ষে জিরাট আদি বারোয়ারি মণ্ডপে তুলে এনেছে কামরূপ কামাক্ষ্যা মন্দির। কর্মকর্তা অসিত সিংহ জানান, বাজেট ২০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। করোনার দুই বছরের তুলনায় বাজেট বেড়েছে এক লাফে প্রায় ৭ গুণ। অসিতবাবু বলেন, ‘‘স্পনসর নেই। সদস্যদের অনুদান, বাড়ি বাড়ি চাঁদাই ভরসা।’’ ২০১৮ সালে বাজেট ৩৫ লাখের বেশি ছিল।

৭ বছর আগে কালিয়াগড় পূর্বপাড়া সুবর্ণজয়ন্তীতে তাজমহ‌ল বানিয়ে চমক দিয়েছিল। এ বার তারা ২০ লক্ষ টাকার বাজেট নিয়ে নেমেছে। মণ্ডপ হয়েছে কর্নাটকের হুবলি শহরের ইসকন মন্দিরের আদলে। সভাপতি তপন দাস বলেন, ‘‘এলাকার৩০০টি পরিবার বাজেট অনুযায়ী যথাসাধ্য চাঁদা দেন। কিছু অনুদানও মেলে। বিজ্ঞাপন এবং প্রচারদুইয়েরই অভাব আছে। বিজ্ঞাপন পেলে জাঁক আরও বাড়ত।’’

স্টেশনপাড়া সর্বজনীনের বাজেট ১২ লক্ষ টাকা। সম্পাদক মানিক মুখোপাধ্যায় জানান, পুকুরের মাছচাষের আয় পুজোয় ঢালা হয়। একই বক্তব্য কলোনি বাজার সর্বজনীনের কর্তা তথা জিরাটের উপপ্রধান অশোক পোদ্দারের। এখানে হোগলা পাতার মণ্ডপ হয়েছে। বিষ্ণুর দশাবতার প্রতিমার ভাবনায়। বাজেট ১২ লক্ষ। অশোকের দাবি, ‘‘কোনও পুজোই চাঁদা চেয়ে জুলুম করে না। এলাকাবাসী সহযোগিতা করেন। কর্মসূত্রে বাইরে থাকা লোকজন এই সময় আসেন, ভাল‌ অঙ্কের টাকা দেন। আমাদের পুজোয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কয়েক মাস দৈনিক টাকা দিয়েছেন, যাতে একবারে চাপ না পড়ে।’’

যুবশক্তি ক্লাবের মণ্ডপে দিল্লির অক্ষরধাম মন্দিরের আদল। সম্পাদক সুকান্ত দেবনাথ বলেন, ‘‘বাজেট ১৫ লাখ ছাপিয়ে যাবে।’’ পোস্ট অফিসপাড়া, শ্যামাপ্রসাদ স্মৃতি সঙ্ঘ, হাটতলা, নাগপাড়া, নট্টপাড়ার পুজোরও কয়েক লাখ খরচ করছে। অশোকের দাবি, ‘‘পুজোকে কেন্দ্র করে ব্যবসা জমে। লেনদেন ভাল হয়। গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য এটা ভাল।’’

সবুজ সঙ্ঘ বানিয়েছে ১০০ ফুটের বেশি লম্বা বুর্জ খালিফা। তাদের বাজেট ৩২ লক্ষ টাকা। কর্মকর্তা তরুণ বিশ্বাস জানান, একটি সিমেন্ট কোম্পানির বিজ্ঞাপন মিলেছে। ক্লাবের মাঠে সাপ্তাহিক হাটের উপার্জিত অর্থ পুজোয় খরচ করা হয়।

পুজোকর্তাদের আশা, জনতার ঢল নামবে জিরাটে। বাড়বে ভিড়ের বহর। শহরের সঙ্গে ভিড়ের লড়াই চলবে গ্রামের। শুধু, বৃষ্টির মতিগতি ভাবাচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy