অনশন মঞ্চের সামনে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ছবি: সিদ্ধার্থ পাল।
আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে গত দু’মাস ধরে উত্তাল রাজ্য। এই ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ও অনশনের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে দেশে-বিদেশে। এ বার সেই বিচারের দাবি নিয়ে গঙ্গাসাগর থেকে সান্দাকফু পর্যন্ত সাইকেলে পাড়ি দিতে চলেছেন এক স্কুলশিক্ষক। নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে প্রায় ১০০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করবেন তিনি ।
হুগলির শিয়াখালা গ্রামের বাসিন্দা, ৪৭ বছরের কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় পেশায় ভবানীপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। পাহাড়ে ট্রেকিং, কোস্টাল ট্রেকিং তাঁর নেশা হলেও গত কয়েক বছরে সাইকেল নিয়ে দূর-দূরান্তে পৌঁছে গিয়েছেন। ফুটবল ম্যাচে মোহনবাগানকে সমর্থন করতে সাইকেলেই পাড়ি দিয়েছেন কলকাতা থেকে জামশেদপুর। তবে এ বার আর জি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিকে সঙ্গী করেই সাগর থেকে সান্দাকফুর (উচ্চতা ৩৬৩৬ মিটার) পথ পাড়ি দিতে চলেছেন কৌশিক। সঙ্গে বার্তা— ‘সাগর থেকে পাহাড়ে যাই, তিলোত্তমার বিচার চাই’। ইতিমধ্যেই ১২ অক্টোবর, দশমীর দিন ভবানীপুর থেকে গঙ্গাসাগর পৌঁছে তাঁর সাইকেল-যাত্রা শুরু করেছেন কৌশিক। একাদশীর সন্ধ্যায় তিনি এসে পৌঁছন ধর্মতলায়, ডাক্তারদের অনশন মঞ্চের সামনে। ‘‘মঞ্চের সামনে উপস্থিত সাধারণ মানুষ ও ডাক্তারেরা অনেকেই শুভকামনা জানিয়েছেন। অনশনকারীদের কাছে পৌঁছতে না পারলেও অন্য ডাক্তারদের কাছে অভিযানের বার্তা দিয়ে এসেছি।’’— বলছেন ওই স্কুলশিক্ষক। আর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলছেন, ‘‘উনি আমার বহু দিনের সহকর্মী। উনি যে এই দাবি নিয়ে অভিযান শুরু করেছেন, সেই সম্পর্কে আমি অবগত আছি।’’
গত দু’মাস আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সমাজমাধ্যমে সরব ছিলেন কৌশিক। ১৪ অগস্টের রাতদখলের রাতেও পথে নেমেছেন, যোগ দিয়েছেন মিছিলে। তাই অভিযানের মাধ্যমে এই বিচারের দাবি জনমানসে ফের ছড়িয়ে দিতে পথে নেমেছেন তিনি। হুগলি থেকে কলকাতা ছুঁয়ে গঙ্গাসাগর সাইকেলে পৌঁছে শুরু হয়েছে অভিযান। কৃষ্ণনগর, বহরমপুর, মানেভঞ্জন হয়ে বাহন-সহ পৌঁছবেন সান্দাকফু। ৩০ তারিখ হুগলির বাড়িতে ফিরে অভিযানের সমাপ্তি। কৌশিক বলছেন, ‘‘পথে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিচারের দাবি নিয়ে কথা হবে। সাইকেলের বোর্ডের লেখা দেখেও অনেকে জানবেন, কথা বলতে আসবেন। তবে সান্দাকফু পর্যন্ত সাইকেল নিয়ে যেতে বন দফতরের কাছে অনুমতি চেয়ে ইমেল করেছি। এখনও তার উত্তর আসেনি। তা নিয়ে খানিক চিন্তায় আছি।’’
তবে কৌশিককে বেশি চিন্তায় রেখেছে ডাক্তারদের অনশন। বললেন, ‘‘ডাক্তারদের দাবিগুলো তো ব্যক্তিগত দাবি নয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির দাবি। সরকারের বিবেচনা করা উচিত। ১৭-১৮ দিন পরে অভিযান সেরে কলকাতায় ফিরতে পারি। ফিরে এসে ধর্মতলায় যেন এই অনশন মঞ্চ আর দেখতে না হয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy