পঞ্চায়েত অফিসে গুলি চলার পর। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার বাঁকড়ায় তিন নম্বর পঞ্চায়েতে গুলি চলার ঘটনায় তিন তৃণমূল কর্মীকে সাসপেন্ড করল দল। তাঁরা হলেন শেখ সাজিদ, ভোলা চক্রবর্তী এবং আজাহার লস্কর। তাঁদের মধ্যে ভোলা বাঁকরা তিন নম্বর পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। সহ-সভাপতি ছিলেন আজাহার। অন্য দিকে, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া ভোলাকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এই তথ্য জানান হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে দল কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিন জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
তবে পঞ্চায়েত অফিসে গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ সাজিদ কল্যাণের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ ওঠে। বিধায়ক অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। পারিবারিক ঝামেলাকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে মুখ ঢেকে বাঁকড়া-৩ পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যে ঢুকে পড়ে জনা তিনেক দুষ্কৃতী। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যেই গুলি চালায় তারা। সরাসরি গুলি না লাগলেও এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধানের বাবা-সহ মোট দু’জন জখম হন। পঞ্চায়েত প্রধান টুকটুকি শেখকে লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি টেবিলের তলায় বসে পড়েন। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার তাদের হাওড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসিপি (সাউথ) বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের নাম ভোলা চক্রবর্তী এবং নবাব। তাঁদের আজ হাওড়া জেলা আদালতে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।’’ তবে যারা গুলি চালিয়েছিল, তারা এখনও অধরা। তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের দখলে বাঁকড়া-৩ পঞ্চায়েতের প্রধান এবং প্রাক্তন এক সদস্যের মধ্যে গন্ডগোলের জেরেই এই গুলি চলেছে। গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সাজিদের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধেও। সাজিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এক সময় জমির দালালি করা সাজিদতৃণমূলে থাকার ‘ফায়দা’ নিয়ে জমি মাফিয়া, প্রোমোটিংয়ে টাকা লাগানো থেকে তোলাবাজির টাকায় ফুলেফেঁপে ওঠেন। কোটিপতি সাজিদের বিরুদ্ধে বর্তমানে তৃণমূলের একাংশ ক্ষুব্ধ ছিল বলে খবর। তৃণমূলেরই অভিযোগ, বর্তমানে পঞ্চায়েতের কোনও পদে না থেকেও কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। তবে সাজিদের আর একটি পরিচয় হল, তিনি বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান টুকটুকির জামাইবাবু। প্রধানকে দিয়ে নিজের মতো করে পঞ্চায়েতে রাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এলাকার মানুষ তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে সাজিদ জানান, তিনি দলের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এটা চক্রান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy