Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal and Saigal Hossain

‘অনুব্রত-সায়গল মডেল’ আর নয়, প্রভাবশালীদের দেহরক্ষী হিসাবে দীর্ঘ দিন পুলিশকর্মীদের না রাখার ভাবনায় নবান্ন

অনুব্রত ও সায়গলের সম্পর্কের রাসায়নে বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পিএসও-দের কাজকর্ম নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছিল স্বরাষ্ট্র দফতরে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু নীতি তৈরি করতে প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর।

Learning from the incidents of Anubrata Mondal and Saigal Hossain, the Home Department is thinking of not keeping PSOs in one post for long

পুলিশকর্মী সায়গল হোসেন ও অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৪ ১১:৫৭
Share: Save:

দীর্ঘ দিন বীরভূম জেলার তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন পুলিশকর্মী সায়গল হোসেন। সেই যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি করেছিলেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। একাধিক দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে অনুব্রত-সায়গল দু’জনেই জেলবন্দি। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার কোনও মন্ত্রী, নেতা বা বিশেষ পরিচয়সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কোনও পুলিশকর্মীকে দীর্ঘ দিন না রাখার প্রস্তাব জমা পড়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরে। নতুন এই প্রস্তাব অনুযায়ী, কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হওয়ার পর সব পিএসও-কেই ওই দায়িত্ব থেকে সরানো হবে। তাঁদের অন্যান্য ডিউটি করানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। নবান্ন এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিলেই তা দ্রুত কার্যকর হবে বলে সূত্রের খবর। পিএসও-দের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সমূলে নাশ করতেই এই পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

অনুব্রত-সায়গলের ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে খোঁজখবর নিয়ে জানা গিয়েছে, রাজ্যের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক তথা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সুরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে একাধিক পিএসও। রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদমর্যাদার পুলিশকর্মীরাই এই দায়িত্বে থাকেন। এমনও দেখা গিয়েছে বহু ক্ষেত্রে কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত পিএসও-রা এই কাজে থেকে যান। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই পিএসও-রা ২০-২৫ বছর ধরে একই কাজ করে যান। দীর্ঘ দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার ফলে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয় পিএসও-দের। মূলত তাঁরাই মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, নেতাদের বিভিন্ন কাজকর্ম সামলান। এই ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ওই পিএসও-রা মন্ত্রীদের সঙ্গে থাকতে থাকতে অনেকেই ফুলেফেঁপে উঠেছেন। নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এমনকি তাঁরা ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অগোচরে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক দুর্নীতিও চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

অনুব্রত ও সায়গলের সম্পর্কের রাসায়নিক বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পিএসও-দের কাজকর্ম নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছিল স্বরাষ্ট্র দফতরে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু নীতি তৈরি করতে প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর। এত দিনে সেই প্রস্তাব পূর্ণাঙ্গ আকারে জমা পড়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরে। লোকসভা নির্বাচনের কারণে এই প্রস্তাবে সিলমোহর এখনই সম্ভব হচ্ছে না। ৪ জুন ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে যে কোনও সময় পিএসও-দের পদোন্নতি দিয়ে দেহরক্ষীর দায়িত্ব থেকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়তে পারে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। এক কথায়, রাজ্যে আর কোথাও ‘অনুব্রত-সায়গল মডেল’ রাখার পক্ষপাতী নয় স্বরাষ্ট্র দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mandal Saigal Hossain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy