Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Rescue Work

সেতুর উপরে যুবক, তিন দমকলকর্মী নামিয়ে আনলেন নেচে-গেয়ে

পুলিশ জানিয়েছে, ভবঘুরে ওই বছর চব্বিশের যুবকের বাড়ি অসমে। পুলিশ তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে চিকিৎসার জন্য।

বিপত্তি: সেতুর উপরে সেই যুবক। বুধবার, হাওড়ার বাঙালবাবু সেতুতে।

বিপত্তি: সেতুর উপরে সেই যুবক। বুধবার, হাওড়ার বাঙালবাবু সেতুতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৮:৩২
Share: Save:

সেতুর নীচে দু’পাশ দিয়ে গিয়েছে পূর্ব রেলের হাওড়া শাখার ২৫ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎবাহী লাইন। সেই সেতুরই স্তম্ভ বেয়ে একেবারে উপরে উঠে বসে ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক। সেখানে বসেই উচ্চস্বরে জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন তিনি। খাবার-সহ নানা প্রলোভন দেখিয়েও কোনও ভাবেই তাঁকে নামাতে পারছিল না পুলিশ ও দমকল বাহিনী। শেষে হাওড়া দমকল বিভাগের তিন জন কর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেতুর মাথায় উঠে ওই যুবকের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে, নেচে, বন্ধুত্ব পাতিয়ে সুস্থ অবস্থায় নীচে নামিয়ে আনেন। পুলিশ জানিয়েছে, ভবঘুরে ওই বছর চব্বিশের যুবকের বাড়ি অসমে। পুলিশ তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে চিকিৎসার জন্য।

বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ হাওড়ার জি টি রোডের উপরে বাঙালবাবু সেতুর একেবারে মাথায় এক যুবককে নাচতে দেখেন পথচলতি লোকজন-সহ সেতুর যানশাসনে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। সেই দৃশ্য দেখতে পেয়েই ধীরে ধীরে সেতুর উপরে লোকজন জমতে থাকে। প্রথমে খবর যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ এসে ওই যুবককে ডাকাডাকি করতেই তিনি নানা অঙ্গভঙ্গি করে উচ্চস্বরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। তত ক্ষণে সেতুতে ধীরে ধীরে যানজট হতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ দমকলকে খবর দেয়। হাওড়া দমকল বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অফিসার সোমনাথ প্রামাণিক দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ও মই নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন।

দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে দমকলের মই নিয়ে সেতুর মাথায় ওঠার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মই দেখেই ওই যুবক ঘাবড়ে গিয়ে সেতু থেকে রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই শেষে মই সরিয়ে রাজীব গঙ্গোপাধ্যায়, সুপ্রিয় গোলুই আর পার্থ মণ্ডল নামে দমকলের তিন কর্মী সেতুর গা বেয়ে উপরে ওঠেন। গান গেয়ে, নেচে ধীরে ধীরে ওই যুবকের কাছে পৌঁছে যান তিন কর্মী। এর পরে তাঁকে ধরে ধরে নীচে নামিয়ে আনেন। সকলে নিরাপদে নীচে নেমে আসতেই হাততালি দিতে থাকে ভিড় করে থাকা জনতা।

হাওড়ার দমকল বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অফিসার বলেন, ‘‘ওই সেতুর নীচ দিয়েই গিয়েছে ২৫ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তার। আমাদের তিন কর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খালি পায়ে সেতুর স্তম্ভ বেয়ে উপরে উঠে ওই যুবককে উদ্ধার করেছেন। শুধু তা-ই নয়, যুবকের ভরসা অর্জন করতে গান গাইতে হয়েছে, নাচতে হয়েছে সেতুর উপরে। ওঁদের কাজ প্রশংসাযোগ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge Fire Workers Mentally Disabled
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE